- শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে কুয়াশা উৎসব।আর সে সোনালী চিল ডানা মেলে দূর থেকে আজো কি মাঠের কুয়াশায় ভেসে আসে’ – কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার মত কুয়াশায় যেন ভেসে যেতে মন চেয়েছিল সবার।
শীতের সঙ্গে কুয়াশার রয়েছে এক নিবিড় সম্পর্ক। শীতের কুয়াশার চাদরে ঢাকা ভোর অথবা সকালের কথা স্মৃতি রোমন্থন করতেই আয়োজন করা হয় কুয়াশা উৎসবের। রাজবাড়ী লেখক পাঠক ফোরাম ও প্রকাশনী সংস্থা অভিযানের যৌথ উদ্যোগে শুক্রবার রাতে রাজবাড়ী শহরতলীর গোদারবাজার পদ্মার পাড়ে তাবু টাঙিয়ে মশাল জ¦ালিয়ে মুড়ি, পাটালি গুড় আর খেজুরের রস দিয়ে এ কুয়াশা উৎসব পালন করা হয়। সেই সাথে ছিল গান আর কবিতা আবৃত্তি।
শীতের স্মৃতিচারণ করেন রাজবাড়ীর সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান, রাজবাড়ী সুহৃদ সমাবেশের উপদেষ্টা মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, সঙ্গীত শিল্পী সুমন আহমেদ, সমকালের জেলা প্রতিনিধি সৌমিত্র শীল চন্দন, সামাজিক সংগঠন স্বপ্নচূড়ার সভাপতি আশিফ মাহমুদ, আরডিএর সাধারণ সম্পাদক ফারুক উদ্দিন, কবি নেহাল আহমেদ, সমাজকর্মী আজরাজেবিন তুলি, সোনিয়া আক্তার স্মৃতি, শিক্ষার্থী সৌরভ চক্রবর্তী প্রমুখ।
স্মৃতিচারণে উঠে আসে গ্রাম বাংলা ও সংস্কৃতির কথা। কীভাবে আগে গাছিরা খেজুর গাছ কাটায় ব্যস্ত থাকতো। রসের খুঁটি বাঁশের বাঁকে নিয়ে কাঁধে করে কীভাবে ছুটতো এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। বাজারে খেজুরের রস বিক্রি হতো গ্লাসে করে। প্রতি গ্লাসের দাম ছিল আট আনা। শীতকালে গ্রামের কিশোর কিশোরীদের বেশির ভাগাই পরতো লাল চাদর। ঘুম থেকে উঠে কেউ কেউ চলে যেত খেজুর গাছের কাছে রস খেতে। ঘরে ঘরে তৈরি হতো নানান স্বাদের পিঠা।
উৎসবের আয়োজক কবি খোকন মাহমুদ, নেহাল আহমেদ ও মনিরুজ্জামান মিন্টু জানান, করোনাকালীন সময়ে সবার মধ্যেই একরাশ হতাশা বিরাজ করেছে। হতাশা থেকে আমরা বের হয়ে আসতে চাই। বিষয়টি নতুন হোক বা ব্যতিক্রম। তাতে যদি সবাই একটু আনন্দ পান বা হতাশা থেকে বের হয়ে আসতে পারেন তাতেই সার্থকতা।