চা বিক্রেতা সেজে সংঘবদ্ধ একটি টিম ইজিবাইক ছিনতাই করতো।চেতনা নাশক চা খেয়ে একই দিনে দুই অটো চালকের মৃত্যু হয়।একজন চা খাওয়াতো,ইজিবাইক চালক অজ্ঞান হয়ে গেলে অন্যারা অটো নিয়ে পালাতো –প্রেস ব্রিফিং এ রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজবাড়ীতে ক্লুলেস ডাবল মার্ডার মামলার রহস্য উদ্ঘাটনসহ ইজিবাইক চোর চক্রের পাচ আসামীকে গ্রেফতার ও লুণ্ঠিত দুইটি ইজিবাইক উদ্ধার করেছে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান ৯ই ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সকালে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং এর আয়োজন করেন। এ সময় রাজবাড়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মোঃ সালাউদ্দিন,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ মঈনুদ্দিন চৌধুরী, ডি আই ওয়ান মোঃসাইদুর রহমান, কালুখালি থানার ওসি নাজমুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ২৬শে জানুয়ারি একই দিনে জেলার কালুখালি থানা ও গোয়ালন্দ থানা এলাকা থেকে চেতনা নাশক ঔষদ চা’এর মাধ্যমে ইজিবাইক চালকদের পান করিয়ে একটি চক্র ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। ইজিবাইক চালক সুজন পাঠান(২৪)কে কালুখালি থানাধীন রাস্তার পাশে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেলে প্রথমে সদর হাঁসপাতাল ও পরে ফরিদপুর মেডিক্যাল হাঁসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। একই দিনে জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার সামনে অজ্ঞান অবস্থায় মোঃ ইসমাইল শেখ(৪৫) কে পাওয়া যায় পরে ফরিদপুর মেডিক্যাল হাঁসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। পরে উভয়ের পরিবার বাদী হয়ে থানায় পৃথক মামলা দায়ের করে।
পুলিশ সুপার জানান, ফরিদপুর মেডিক্যাল হাঁসপাতাল মরদেহের ময়না তদন্ত ছাড়াই পরিবারের দাবীতে মরদেহ দিয়ে দেয়। পরে আমি গোয়ালন্দ থানার ওসিকে মোঃ ইসমাইল শেখ(৪৫) এর মরদেহের মেডিক্যাল রিপোর্ট করাতে বলি। পরে তার পেটে চেতনা নাশক ঔষদ পাওয়া যায়। একই দিনে একই রকম ঘটনা ঘটে যার প্রেক্ষিতে পুলিশ ব্যাপক তদন্ত শুরু করে। পরে পাংশা সার্কেল সুমন কুমার সাহা,কালুখালি থানার ওসি নাজমুল হাসান প্রযুক্তির ব্যাবহারের মাধ্যমে ঢাকা জেলা ও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও পাবনার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত সংঘবদ্ধ ইজিবাইক চোর চক্রের সদস্য,হত্যার সাথে জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার পাচ জন হলো- মোঃ আশিক ওরফে আকাশ মাদবর(১৯), মোঃরবিন হোসেন(২২), মোঃনিজাম উদ্দিন ওরফে সালমান(৩০),মোঃ আকরাম হোসেন(২৬),মোঃসাদ্দাম হোসেন(২৬)।
পুলিশ সুপার জানান, তারা উভয়েই সংঘবদ্ধ সক্রিয় চোর চক্র ।ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা তারা স্বীকার করেছে। দীর্ঘদিন ভ্রাম্যমাণ চা বিক্রেতা সেজে দেশের বিভিন্ন জেলায় চায়ের সাথে চেতনা নাশক দ্রব্য কৌশলে মিশিয়ে ইজিবাইক চালকদের অজ্ঞান করে ইজিবাইক নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে আসছে । আর এসব চেতনা নাশক দ্রব্য মাত্রাতিরিক্ত খেয়ে কেউ অসুস্থ্য হয়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে আর যারা একটু শারীরিকভাবে দূর্বল তারা মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে।
এ সময় অপরিচিতদের কাছ থেকে চা সহ যেকোন কিছু না খাওয়ার জন্য সকলকে অনুরোধ জানান তিনি।