Friday, November 15, 2024

শশুর বাড়ী থেকে জামাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের সিঙ্গা আলীপুরের মোহাম্মদপুর গ্রামের আঃ খালেকের বাড়ী থেকে তার মেয়ে জামাই আলিম (৩৫) এর মর দেহ উদ্ধার করেছে রাজবাড়ী সদর থানা পুলিশ ।
নিহত আলিম সদর উপজেলার একই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মজিদ সর্দারের ছেলে ।
জানাগেছে, গত ৮ই মার্চ রাত ১২টার দিকে ডেকোরেটরের কাজ শেষ করে শ্বশুরবাড়ি যায় , নিজের বাড়ী থেকে খেয়ে যাওয়ার কারনে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে কিছু না খেয়েই স্ত্রী ও ৩বছরের কন্যা শিশু আরিফাকে নিয়ে ঘুমিয়ে পরে । হটাত স্ত্রী খালেদার ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখে তার স্বামী আলিম বিছানায় নেই। পরে খোজাখুজি করে এক পর্যায়ে দেখে ঘড়ের আড়ার সাথে ঝুলে আছে। পরে চিৎকার করে সবাইকে ডাকাডাকি করে পরে আলিমের শাশুড়ি মালেকা এসে কাচি দিয়ে আড়ার সাথে ঝুলানো দড়ি কেটে আলিমকে নিচে নামায় । পরে গ্রাম্য ডাক্তার হালিম এসে তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
পরদিন বুধবার সকালে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নিহত আলিমের বাড়ীতে গ্রামের মানুষের ভিড় আর কান্নার আহাজারি । তখন নিহত আলিমের লাশ মর্গ থেকে অয়না তদন্ত করে বাড়ীতে আনা হয়েছে ।
নিহত আলিমের মা রোকেয়া জানান, রাতে আমার ছেলে বাড়ী থেকে খেয়ে শশুর বাড়ীতে যায়, ভোর রাতে আমরা খবর পাই আমার ছেলে হলায় দড়িও নিয়ে আত্ন হত্যা করেছে। আমরা গিয়ে দেখি আমার ছেলেকে ফ্লোরে শোয়ানো ।

নিহত আলিমের স্ত্রী খালেদা জানায়, আমাদের ৬ বছর ধরে বিয়ে হয়েছে। একটি কন্যা সন্তান রয়েছে আমাদের । আমি কিছুদিন বাবার বাড়ীতে এসেছি । গতকাল রাত একটা দিকে আমার স্বামী আলিম বাড়ীতে আসে। খাবার কথা বললে সে জানায় বাড়ী থেকে খেয়ে এসেছি ,খাবে না বলে জানায়। একটু পর কান্নাকাটি করে , অনেক ঋণ ছিলো আলিম । পরে আমরা উভয়েই বলাবলি করি যে দুইজনেই কাজ করে ঋণ শোধ করবো। পরে তার হাতের উপর মাথা রেখে ঘুমিয়ে ছিলাম। হতাত ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখি আলিম বিছানায় নাই , উঠে খোজাখুজির এক পর্যায় দেখি আলিম গড়ের আরার সাথে ঝুলছে ,পরে চিৎকার করি,আমার কাধের উপর আমার স্বামী আলিমের দুই পা দিয়ে উচু করে ধরে রাখি। পরে আমার মা এসে কাচি দিয়ে দড়ি কেটে আলিম কে নামায়। পরে দেখি একটা কাপড়ের বেল্ট দিয়ে আলিম গলায় পেঁচিয়ে ঝুলেছিলো । আমি আর আমার মা বাড়ির সবাই মিলে গায়ে বুকে তেল মালিশ করি ,পরে স্থানীয় গ্রাম্য দাক্তার হালিম কে ডেকে আনা হয় । পরে তিনি জানান, আলিম মারা গেছে। সে ঋণের চাপেই আত্ন হত্যা করেছে ।

তবে আলিমের এ মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি তার পরিবারের সদস্যরা। নিহত আলিমের বোন খাদিজা জানায়, ছোট ছেলেদের কাপড়ের এক হাত মাপের একটা বেল্ট দিয়ে কিভাবে আত্ন্য হত্যা করতে পারে। পাশেই টিনের বেড়া, মৃত্যুর সময় মানুষ একটু হলেও বাচার চেষ্টা করে। আমার ভাই যদি তখন বাচার চেষ্টা করতো টিনের সাথে পা দিয়ে শব্দ করলে সবাই শুনতে পারতো, আবার সেখানেই ২টা বাইসাইকেল ছিলো সেখানে পা রাখলে সে বেচে যেত , গলায় কোন দাগ দেখা যায় নাই ,বুকের উপর দাগ দেখা গেছে ,আবার গলায় দড়ি নিয়ে কেউ মারা গেলে জ্বিব্বা বেড় হয় , আমার ভাই আলিমের তা হয় নাই । ‘

এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি মোঃ শাহাদাত হোসেন, বলেন আমি সহ সদর সার্কেল ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম, ঋণের চাপে আলিম নামে ছেলেটি আত্ন হত্যা করেছে বলে জানাগেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । এ বিষয়ে একটি অপ মৃত্যু মামলা রুজু করা হয়েছে ।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here