এস,এম রাহাত হোসেন ফারুক : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের কোনা গ্রামের শ্রমিকলীগের সহ- সভাপতি আজিজ মহাজনকে কুপিয়ে হত্যা মামলার ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাবা ছেলে সহ প্রধান ৩ আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব- ১০ ফরিদপুর ক্যাম্প ।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার কে এম শাইখ আকতার এ তথ্য জানান।
রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানাধীন কোনাগ্রাম এলাকায় বসবাসকারী নারুয়া ইউনিয়নের শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি মৃত আজের আলী মহাজনের ছেলে ভিকটিম মুন্না আজিজ মহাজন (৪০) এর সাথে গ্রেফতারকৃত আসামিদের পূর্ব হতে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলছিল। উক্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে গ্রেফতারকৃত আসামীরাসহ ৩২-৩৩ জন মিলে মুন্নাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরবর্তীতে গত ১৫ই অক্টবর সন্ধ্যা সারে ৭টার দিকে মুন্না নিজস্ব মোটরসাইকেলযোগে তার ভাইয়ের বাসা থেকে নিজ বাড়ীতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে কোনাগ্রামস্থ একটি পাকা রাস্তার উপর পৌছালে পূর্ব হতে ওৎ পেতে থাকা ৩২-৩৩ জন লোক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (রামদা, চাইনিজ কুড়াল, ছেনদা, লোহার রড ও বাশেঁর লাঠি ইত্যাদি) নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আজিজ মহাজনের উপর অতর্কিত আক্রমন করে। পরে গ্রেফতারকৃত শাহাদাতের নির্দেশে আসামিরা আজিজ মহাজনকে নৃশংসভাবে শরীরের বিভিন্ন স্থানে রামদা, চাইনিজ কুড়াল ও ছেনদা দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কোপাতে থাকে। যার ফলে ভিকটিম আজিজ মহাজন মোটরসাইকেল হতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরবর্তীতে অন্যান্য সহযোগীরা তাদের কাছে থাকা লোহার রড ও বাশেঁর লাঠি দিয়ে বেধরক মারধর করতে থাকে যার ফলে আজিজের শরীরের বিভিন্নস্থানে গুরুতর রক্তাক্ত জখম প্রাপ্ত হয় এবং তার নাক ও কান দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। আজিজের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামিরা দ্রæত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন আজিজকে গুরুতর রক্তাক্ত আহত অবস্থায় বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুন্নাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে গত ১৬/১০/২০২৩ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক রাত ০১:২০ ঘটিকায় কর্তব্যরত চিকিৎসক আজিজকে মৃত ঘোষনা করেন।
উক্ত হত্যাকান্ডের পর মৃত আজিজের ভাই মোঃ আব্দুর রহমান (৪৫) বাদি হয়ে রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানায় শাহাদাত ও রাফিসহ ২৪ জন এবং অজ্ঞাতনামা আরো ৮/৯ জনের বিরুদ্ধে ১৬ই অক্টবর সকালে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা রজুর বিষয়টি জানতে পেরে উক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত সকল আসামিরা আত্মগোপনে চলে যায়।
নৃশংস এই হত্যাকান্ডটি ইতোমধ্যে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও ইলেকট্রনিক প্রিন্ট মিডিয়ায় গুরুত্বসহকারে প্রকাশ করায় দেশব্যপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডের বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব -১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত হত্যাকান্ডে জড়িত আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ছায়া তদন্ত শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১০ এর উক্ত আভিযানিক দল অদ্য ১৭ অক্টোবর ২০২৩ খ্রিঃ তারিখ মাঝ রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী থানাধীন কালিকাপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর আজিজ মহাজনকে নৃশংসভাবে হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত পলাতক আসামি ১। শাহাদাত মন্ডল (৬৫), পিতা-মৃত তেজারত মন্ডল, ২। মোঃ রাফি মন্ডল (৩২), পিতা- শাহাদাত মন্ডল ও অপর একজন আসামী ৩। মোঃ মেহেদী হাসান দিপু (৩০), পিতা- শাহাদাত মন্ডল, সর্বসাং-কোনাগ্রাম, থানা-বালিয়াকান্দি, জেলা-রাজবাড়ী’কে মামলার ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করে। অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্ঠা অব্যাহত রয়েছে। ‘