আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া তালেবান জানিয়েছে, তারা সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পরিকল্পনা করছে। শনিবার তালেবানের সূত্রের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার বিশেষ এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে আফগানিস্তানের সব জাতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা থাকবেন বলে কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীটির একাধিক নেতা আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও নতুন এ সরকারের মেয়াদ কতদিনের হতে পারে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।
জাতিগত বৈচিত্র্যই আফগানিস্তানের রাজনীতি ও দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা সংঘাতের কেন্দ্রে অবস্থান করছে; ৪ কোটি জনসংখ্যার দেশটির ৪২ শতাংশ পশতুন, তারাই দেশটির সবচেয়ে বড় জাতিগোষ্ঠী।
প্রধানত সুন্নি মুসলিম এই সম্প্রদায়ের লোকজন পশতু ভাষাভাষী, অষ্টাদশ শতক থেকে আফগান রাজনীতিতে তাদের প্রভাব সবচেয়ে বেশি।
তবে তালেবান নেতারা জানিয়েছেন, তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারে একজন ‘আমির উল মোমিনীন’ থাকবে, যিনি ইসলামিক আমিরাত অব আফগানিস্তানকে নেতৃত্ব দেবেন।
ভবিষ্যৎ সরকারের ধরন কি হবে, এবং কারা কারা মন্ত্রী হবেন তা ঠিক করতে একটি সুপ্রিম লিডারশিপ কাউন্সিল গঠিত হয়েছে; তারাই আইন, স্বরাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র, অর্থ, তথ্য ও কাবুল বিষয়ক বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বেছে নেবেন।
সরকার গঠনের লক্ষ্যে তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা বারাদার এখন আফগানিস্তানের রাজধানীতে অবস্থান করছেন। গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুবও কান্দাহার থেকেনি কাবুলে এসেছেন বলে জানিয়েছেন তালেবান নেতারা। সরকার গঠন নিয়ে এ দু’জনের মতামতের গুরুত্ব বেশি থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
তালেবানের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, তারা নতুন সরকারে তাজিক ও উজবেক উপজাতি নেতাদের সন্তানসহ অনেক নতুন মুখ সামনে নিয়ে আসতে আগ্রহী।
তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের সমর্থিত আগের সরকারগুলোর প্রতিনিধিদের রাখতেও চাপ দিচ্ছে, যে কারণে পরবর্তী প্রশাসনেও আফগানিস্তানের সাবেক প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও হাই কাউন্সিল ফর ন্যাশনল রিকনসিলিয়েশনের সাবেক প্রধান আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহকেও দেখা যেতে পারে।