উজ্জল হোসেন, পাংশা : রাজবাড়ীর পাংশায় সাপে কাটা স্কুল ছাত্রী সাফার চিকিৎসায় ডাক্তারের অবহেলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বীর বিক্রম শহীদ খবিরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় ও পন্ডিত কাজী আবুল হোসেন কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নে অবস্থিত বীর বিক্রম শহীদ খবিরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সাপের কামড়ে নিহত অত্র বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সাফার চিকিৎসায় অবহেলা করার প্রতিবাদে এ মানববন্ধন করেন তারা। নিহত সাফা জয়কেষ্টপুর গ্রামের মো. শাজাহান মণ্ডলের কণ্যা।
বীর বিক্রম শহীদ খবিরুজ্জান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল মজিদ এর সঞ্চালনায় ও
প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল জলিলের সভাপতিত্বে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, পন্ডিত কাজী আবুল হোসেন কলেজের প্রভাষক মো. জহুরুল ইসলাম, তারাপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. আব্দুর রহিম, বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. রবিউল আলম ছগির প্রমূখ। মানবন্ধন পরিচালনা করেন হাবাসপুর কে রাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারি শিক্ষক মো. মসলেম উদ্দিন মনির। এ মানববন্ধনে বীর বিক্রম শহীদ খবিরুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয় ও পন্ডিত কাজী আবুল হোসেন কলেজে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও নিহত সাফার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে বক্তরা বলেন, গত মঙ্গলবার(২২ অগাষ্ট) রাত ২ টার দিকে ছাত্রী সাফা (১৩) নামের এক শিক্ষার্থীর সাফাকে সাপে কামড় দেয়। রাত আড়াইটার দিকে সাফাকে চিকিৎসার জন্য পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় তার পরিবার। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান হাসপাতালে ভ্যাকসিন নেই এবং সাফার পরিবারকে বাইরে থেকে ভ্যাকসিন আনতে বলেন। পাংশার কোথাও ভ্যাকসিন না পেলে সাফারে কুষ্টিয়া নিয়ে যায় তার প্ররিবার। এতে অনেক সময় খ্যাপন হয়ে সাফার মৃত্যু হয়।
যে কারণে মানববন্ধন করেন তারা, সাফার মৃত্যু নিয়ে গত বুধবার (২৩ আগস্ট) দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ‘দুই হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। উক্ত সংবাদে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সুজা উদ্দিন জানান, রাত ২টা ৪৫ মিনিটে সাফাকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়। তাদের কাছে সাপে কাটা রোগীর ভ্যাকসিন মজুদ আছে। তবে রোগিকে প্রয়োগের আগে বলা হয় রিস্ক বোন্ডে স্বাক্ষর করতে। সাফার পরিবারের সদস্যরা ওই রিক্স বন্ডে স্বাক্ষর করতে রাজি হন নি। যে কারণে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রেফার্ড করা হয়।
সংবাদ মাধ্যমে সাফার পরিবার বিষয়টি জানতে মসলেম উদ্দিন মনির নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে জানান, হাসপাতালের আছে এই কথা কোন ডাক্তার তাদের বলে নাই। তাদের রিস্ক বন্ডে স্বাক্ষর করতে বলেনি। একটি কাগজে ভ্যাকসিনের নাম লেখে দিয়ে বলেছে এই ভ্যাকসিন বাইরে থেকে কিনে আনতে। আমরা কোথাও ভ্যাকসিন না পেলে আমাদের রেফার্ড করে দেয়।
ডাক্তারের অবহেলা ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানাতে এ মানববন্ধন করা হয়।রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ ইব্রাহিম টিটোন জানান, জেলা সদরসহ জেলা ৫টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই সাপে কাটা রোগির ভ্যাকসিন আছে। সাফার মৃত্যুর বিষয় নিয়ে একটু ধোয়াসা রয়েছে। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তাদেরকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’