ডেস্কঃ সাপ আমাদের সকলের অতি পরিচিত একটি সরিসৃপ প্রানী। এক দিকে যেমন এটি আমাদের সকলের পরিচিত ঠিক তেমনি ভীতিরও কারণ। বর্ষা, অতিগরম, বন্যা, ঝড়ে এদের উপদ্রব বাড়তে পারে।
প্রতি বছর সারা পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ সাপের কামড়ে মৃত্যুবরণ করে। সাপের কামড়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মৃত্যুবরণ হয় অজ্ঞতা এবং ভীতির কারণে। আমাদের দেশে সাপের কামড় হতে বাচার বিজ্ঞান সম্মত চিকিৎসা রয়েছে। তবে গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কুসংস্কারে আচ্ছন্ন থাকার কারণে হাসপাতালে না গিয়ে বিভিন্ন ওঝা বা সাপুড়ের কাছে যায়। এরা সাপের বিষ নামাতে পারে না বরং রোগীকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়।
সাপে কামড়ালে প্রাথমিক চিকিৎসা আমাদের সকলের জানা উচিত।
আসুন জেনে নেই কোন ব্যক্তিকে সাপে কামড়ালে করণীয় কীঃ
এ ক্ষেত্রে যা করবেন:
* সাপে কাটলে আতঙ্কিত না হয়ে নিরাপদ স্থানে বসে থাকুন। আক্রান্ত অঙ্গ নাড়াচাড়া করবেন না। গামছা/তোয়ালে/ কাপড়ের সাহায্যে আক্রান্ত স্থানটি বেঁধে ফেলুন। খুব বেশি শক্ত করে বাঁধবেন না, এতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এমনভাবে বাঁধতে হবে, যেন আক্রান্ত অঙ্গ ও কাপড়ের মাঝে কষ্ট করে একটি আঙুল ঢোকানো যায়।
*আক্রান্ত ব্যাক্তিকে নিকটস্থ হাসপাতালে নেওয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে। কখনোই ওঝা, ফকির বা সাপুরের কাছে নেওয়া চলবে না। অ্যান্টিভেনোম হচ্ছে বিষধর সাপে কাটা রোগীর জন্য একমাত্র চিকিৎসা। রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে এলে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রয়োজনও হতে পারে। মনে রাখবেন, এসব চিকিৎসা শুধু হাসপাতালেই করানো সম্ভব, অন্য কোথাও নয়।
* সাধারণত নির্বিষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত স্থানে সামান্য ব্যথা, ফুলে যাওয়া বা অল্প ক্ষত সৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে এসব লক্ষণ থাকলেও ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়, যেকোনো রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত।
#যা করা যাবে নাঃ
* আক্রান্ত স্থানে কাটা যাবে না।
* দড়ি দিয়ে খুব শক্ত করে বাঁধা যাবে না। এতে পচন ধরতে পারে।
* আক্রান্ত স্থান থেকে মুখের সাহায্যে রক্ত বা বিষ টেনে বের করার চেষ্টা না করা।
* আক্রান্ত স্থানে গোবর, শিমের বিচি, আলকাতরা, ভেষজ ওষুধ বা কোনো প্রকার রাসায়নিক লাগানো যাবে না।
কালুখালী উপজেলার জন্য অবহিতকরণঃ
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন সর্প-দংশনের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনমের সরবারহ আছে। এই অ্যান্টিভেনমটি শিরায় ইঞ্জেক্টেবল একটি তরল মিশ্রন যা পদ্মগোখরা, রাজগোখরা, রাসেলস ভাইপার (চন্দ্রবোড়া), এবং শঙ্খিনী বা কমন ক্রেইট ইত্যাদি সাপের বিষ প্রতিরোধে সক্ষম। তবে শর্ত এই যে খুব দ্রুত (১০০ মিনিটের মধ্যে) রোগীকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসতে হবে। সাপের বিষ খুব দ্রুত রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। ছড়িয়ে পড়া বিষ রক্ত ও বিভিন্ন অঙ্গ অকেজো করে ফেললে অ্যান্টিভেনমের সফলতা হার হ্রাস পায়।
মনে রাখবেন, আপনার সচেতনতা-ই বাঁচাতে পারে একটি প্রান!
জনস্বার্থেঃ উপজেলা প্রশাসন, কালুখালী।