স্বাস্থ্য ডেস্ক : প্রতি বছর আমাদের দেশে সাপের কামড়ে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়। শহরের চেয়ে গ্রামে সাপের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি।
বিষধর সাপের কামড়ে মৃত্যুর অন্যতম কারণ সচেতনতার অভাব, সঠিক চিকিৎসার অভাব বা চিকিৎসা নিতে বিলম্ব হওয়া। এখনো অনেক গ্রামে কুসংস্কার আছে, সাপে কাটলে ওঝা বা বেদের কাছে নিয়ে যেতে হবে। অনেকেই সাপে কাটলে বৈজ্ঞানিক উপায়ে কীভাবে চিকিৎসা নিতে হবে বা সাপে কাটলে করণীয় কী তা জানেন না। তাই আগেই জেনে রাখা ভালো, সাপে কামড়ালে কী করা উচিত আর কী করা যাবে না।
১. অনেকে প্রথমে শক্ত বাঁধন বা গিট দিয়ে ফেলেন। কিন্তু এমনটি করা যাবে না। হাত বা পায়ে কামড় দিলে, কামড়ানো জায়গা থেকে ওপরের দিকে দড়ি বা এ জাতীয় কিছু দিয়ে শক্ত করে বাঁধা হয়, যাতে বিষ ছড়িয়ে না পড়ে। কিন্তু এর বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি নেই। বরং এতে হাত/পায়ে রক্ত প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হয়। ফলে রক্ত প্রবাহের অভাবে টিস্যুতে পচন (Necrosis) শুরু হতে পারে।
২. কামড়ানোর স্থানে ব্লেড, ছুরি দিয়ে কাটাকুটি করা যাবে না। অনেকে বিষ বের করার জন্য এমনটি করেন কিন্তু এটিও বিশেষজ্ঞ ছাড়া করা যাবে না।
৩. অনেক মানুষের ধারণা, আক্রান্ত স্থানে মুখ লাগিয়ে চুষে বিষ বের করলে রোগী ভালো হয়ে যাবেন। অন্তত অনেক সিনেমায় এমনটিই দেখানো হয়। এমনটি না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। সাপের বিষ রক্ত ও লসিকার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যা এভাবে বের করা সম্ভব নয়। কোনো অবস্থাতেই আক্রান্ত স্থানে মুখ দেবেন না। আপনার নিজের ক্ষতি হবে।
৪. কোনো ভেষজ ওষুধ, লালা, পাথর, উদ্ভিদের বীজ, গোবর, কাদা ইত্যাদি লাগানো যাবে না।
৫. কোনো রাসায়নিক পদার্থ লাগানো বা তা দিয়ে সেঁক দেওয়া ঠিক হবে না।
৬. যদি আক্রান্ত ব্যক্তির ঢোক বা খাবার গিলতে বা কথা বলতে সমস্যা হয় এবং এর পাশাপাশি বমি, অতিরিক্ত লালা নিঃসরণ, নাসিক কণ্ঠস্বর ইত্যাদি দেখা দেয় তাহলে কিছু খাওয়ানো যাবে না।
৭. কিছু খাইয়ে বমি করানোর চেষ্টা করাও এ সময় উচিত নয়।
৮. ব্যথার জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ানো যাবে না ভুলেও।
১. অনুগ্রহপূর্বক আতঙ্কিত হবেন না। বেশিরভাগ সাপ বিষহীন।
২. দংশিত অঙ্গ (হাত-পা কিংবা অন্য অঙ্গ) বিশ্রামে রাখুন।
৩. পায়ে দংশন করলে বসে পড়ুন, হাঁটবেন না। হাতে দংশন করলে নাড়াচাড়া করবেন না।
৪. হাড় ভাঙলে যেভাবে কাঠ-ব্যান্ডেজ দিয়ে স্প্লিন্ট করে, সেভাবে ব্যবস্থা নিন।
৫. দংশিত অঙ্গে কোনোভাবেই গিঁট দেবেন না।
৬. সঙ্গে সঙ্গে কাছের হাসপাতাল বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৭. হাসপাতালে পৌঁছতে দ্রুত যান তথা মোটরসাইকেল বা অ্যাম্বুলেন্সের সাহায্য নিন।
৮. দংশিত স্থান কাটবেন না, সুঁই ফোটাবেন না কিংবা কোনো রকম প্রলেপ লাগাবেন না।
৯. ওঝা বা বৈদ্য দিয়ে চিকিৎসা করে কিংবা ঝাড়-ফুঁক করে অযথা সময় নষ্ট করবেন না।
#healthtipsdesk