গত বছরের সতেরো মার্চ থেকে কোভিড-১৯ প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে স্কুল বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘ দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ থাকার কারনে হাঁপিয়ে উঠেছে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা। পাশাপাশি অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন তাদের সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে। দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকার কারনে বেড়েছে শিশু শ্রম, বাল্যবিবাহ ও গেমসহ বিভিন্ন বিষয়ে আসক্তি হয়ে পড়েছে স্কুল্ গামী শিশুরা ।
এমত অবস্থায় সম্প্রতি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হার কমে আসায় সরকার আগামী ১২ ই সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল কলেজ খোলার ঘোষণা দেন। এতে আনন্দে দিশেহারা হয়ে পড়ে শিক্ষক, ছাত্র- ছাত্রীসহ অভিভাবকগন। কিন্তু এই আনন্দ মলিন হয়ে গেছে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার বন্যায় প্লাবিত নিন্ম অঞ্চলের মানুষজন।
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলায় প্রতিদিন পদ্মার পানি বাড়ছে এরফলে পদ্মা নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে গোয়ালন্দ উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজে পানি উঠেছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানাযায়, এখানকার নয় সরকারি প্রাথমিক, একটি মাধ্যমিক ও একটি কলেজে পানি উঠেছে। এগুলো হলো, চাঁদ খার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর দৌলতদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেনা পচা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেতকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেথুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,মজলিস পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৌলতদিয়া ঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সাহাজদ্দিন মাতবর পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠেছে আক্কাস আলী হাই স্কুলে। আরো পানি উঠেছে বেসরকারি কলেজ ফকির আবদুল জব্বার মহিলা কলেজে। এছাড়া পানি আরো বাড়লে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে আরো কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়।
চান খার পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তৃপ্তি বিশ্বাস বলেন, তার স্কুলটি পদ্মা নদীর তীরে দৌলতদিয়া ছয় নম্বর ফেরিঘাটে অবস্থিত। পদ্মানদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে তার বিদ্যালয়ের মাঠে ও শ্রেণি কক্ষে পানি প্রবেশ করেছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
দৌলতদিয়া ঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক মোস্তফা সেখ বলেন, দীর্ঘদিন ছেলে মেয়ে গুলো বাড়িতে আছে পড়াশোনা নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম। এমত অবস্থায় স্কুল খুললে সবাই রক্ষা পেতাম। ছেলে মেয়ে গুলো স্কুলমুখি হতো কিন্তু বন্যার কারনে এখন পড়াশোনা আবার অনিশ্চয়তার মধ্যে পরে গেল।
সাহাজদ্দিন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, তার বিদ্যালয়ের মাঠে পানি উঠে গেছে কিন্তু পানি আর দুই একদিন বাড়লে শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই একটির মাঠে পানি উঠেছে তবে পানি বাড়লে আরও কয়েকটি বিদ্যালয়ে পানি উঠার আশংকা রয়েছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কবির হোসেন বলেন,বিদ্যালয় গুলোতে পানি উঠার ব্যাপারে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে তিনি যে সিদ্ধান্ত দেবেন সেভাবেই করবো।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসনে ইয়াসমীন কারিম জানান, আমরা এ বিষয়ে ডিজি ময়দয়ের সাথে কথা বলেছি,তিনি আমাদের বলেছেন প্রতিবেদন পাঠাতে ।আমরা প্রতিবেদন প্রস্তুত করছি।