বালিয়াকান্দি সংবাদদাতা : রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার হাবাসপুর জাতীয়করণকৃত সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রামপ্রসাদ মালাকর দেড় বছর যাবত ব্যাংকে শুধু তথ্যই গোপন করেন নাই, তিনি সাবেক সভাপতির স্বাক্ষর নকল করে নিয়মিত ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতেন।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) সাবেক সভাপতি রুপন মন্ডলের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তিনি জানান, চলতি বছরে কোন চেকে স্বাক্ষর করেছেন বলে মনে নেই। ২০২১ সালে কয়েকটি চেকের পাতায় স্বাক্ষর করেন বলে জানান।
অভিযুক্ত রাম প্রসাদ মালাকরের আর্থিক দুর্নীতিসহ জাতীয় শোক দিবস ও শেখ রাসেল দিবসের অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে গত ২৯ অক্টোবর ‘শিক্ষকের বিরুদ্ধে শেখ রাসেল দিবসের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে আমার সংবাদ পত্রিকার অনলাইনে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয় ‘আমার সংবাদে প্রতিবেদনের পর তদন্ত কমিটি গঠন’। গঠিত তদন্ত কমিটি ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করবেন বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা যায়।
উল্লেখ্য, হাবাসপুর জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান কমিটি গঠন হয় ২০২১ সালের মার্চ মাসে। কমিটির সভাপতি শাপলা রানী দাস। ২০২১-২২ অর্থ বছরে স্লিপ ফান্ড, রুটিন মেরামত, প্রাক-প্রাথমিক খাতে ১০ হাজার টাকাসহ বিভিন্ন খাতে লক্ষাধিক টাকা অর্থ ব্যাংক থেকে উত্তোলন করা হলেও বর্তমান সভাপতির স্বাক্ষর নেয়া হয়নি। এছাড়াও জাতীয় শোক দিবসে রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক এসব অনুষ্ঠান দায়সারা করেন বলে অভিযোগ। প্রত্যেক বিজয়ী শিশুদেরকে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বই উপহার দেয়ার কথা থাকলেও বিগত বছরে ক্রয়কৃত বই শিশুদের মধ্যে বিতরণ করেন প্রধান শিক্ষক, যা পরবর্তীতে ফেরত নেয়া হয় বলে অভিযোগ। গত ১৮ অক্টোবর শেখ রাসেল দিবসে শিশুদের মধ্যে চিত্রাংকন, কুইজ, রচনা ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বিজয়ী শিশুদের মধ্যে গত বছরের ক্রয়কৃত বই ৪-৫ জনকে মিলে একটি পুরস্কার ও একাধিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের একটি পুরস্কার প্রদান করা হয়। বিতরণকৃত পুরস্কার কয়েকদিন পর শিশুদের থেকে ফেরত নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কমিটির সদস্য ও কয়েকজন শিক্ষক।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক রাম প্রসাদ মালাকর শিক্ষার্থীদের পুরস্কার দিয়ে ফেরত নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। সোনালী ব্যাংকে সভাপতি ও তার নামে যৌথ হিসাবের বিষয়ে তিনি বলেন, এখনো অপারেটর (সভাপতি) পরিবর্তন করা হয়নি। সাবেক সভাপতি রুপন মন্ডলের স্বাক্ষরে পরিচালিত হচ্ছে বলে স্বীকার করেন। ২০২১-২২ অর্থ বছরের স্লিপ ফান্ড ও অন্যান্য ফান্ডের টাকা উত্তোলন করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।
msd/bk/rj