Saturday, December 21, 2024

২৬ টি দেশে যাচ্ছে রাজবাড়ীর পণ্য

মোজাম্মেল হক লালটু, গোয়ালন্দ: রাজবাড়ীর জেলার বরাট ইউনিয়নর ভবদিয়ায় গড়ে উঠছে গোল্ডেন জুট  প্রোডাক্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। এখানে ধানর খড়, পাট, হাগলা ও কচুরিপানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিবশবান্ধব শতাধিক ধরনের পন্য। এখানে তৈরি হচ্ছে, ম্যাট, পাপস, টুপি, ফুলের টপ, ব্যাগসহ শতাধিক ধরনের পন্য। এসব পন্য রপ্তানি হচ্ছে জাপান, কানাডা, আমেরিকা, চিন, জাপান অস্টলিয়া, সৌদি আরবসহ ২৬ টি দেশে। এসকল পন্য বিদেশে রপ্তানি করে দেশে আসছে বৈদেশিক মুদ্রা। এছাড়াও পল্লী গ্রামে প্রতিষ্ঠানটি তৈরি হওয়ায় দুই হাজারের বেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

গোল্ডেন জুট প্রাডাক্টর কার্যালয় সুত্রে জানাযায় গেছে, ২০১৪ বরাট ইউনিয়নর ভবদিয়া এলাকার অবসর প্রাপ্ত প্রকৌশলী মো. হাকিম আলী সরদার তার নিজ এলাকার মানুষের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি ও পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষা করে এমন কিছুর করার চিন্তা থেকেই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

নিজের তিন একর জমি ও জমানো কিছু টাকা ও ইসলামি ব্যাংকের সহযোগিতায় গড়ে তোলেন গ্লোবাল গাল্ডন জুট এন্ড ক্রাফট লিমিটেড। বর্তমানে এখানে নিয়মিত কাজ করছে ৮০০ শ্রমিক। আর চুক্তি ভিত্তিতে বাহিরে কাজ করছে আরো ১২০০ শত’র বেশি শ্রমিক। যার বেশির ভাগই সর্বনাশা পদ্মায় ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব।এখানে পুরুষ শ্রমিকের সাথে তালমিলিয়ে পাল্লা দিয়ে কাজ করছে নারী শ্রমিকরা।

শ্রমিক কালাম মিয়া ও সোহেল রানা বলনে, আমি এক সময় ঢাকায় একটি পাশাক কারখানায় কাজ করতাম। ঢাকায় কাজ কর আমি য বতন পতাম রাজবাড়ীতও সই বতন পাছি। সুবিধা হয়ছ ঢাকায় বাসা ভাড়া ও অন্যান্য কর সংসার চালাত হিমসিম খয়ছি। আর এখান নিজর বাড়িত থক কাজ করত পারছি। এখন অনক ভালাভাব কাটছ দিন।

স্মৃতি আক্তার ও হাসি আক্তার নামে আরো দুই শ্রমিক বলেন, সর্বনাশা পদ্মার ভাঙ্গনে ঘরবাড়ি জমিজমা সব হারিয়েছি। বাড়ির কাছে এই কারখানায় চাকুরী করে এক বছর ৮৫ হাজার টাকা জমিয়েছি। আর একটু জমি কিনে ঘর তোলার স্বপ্ন দেখছি।আমাদের মতো অনেক নারী আছে যারা এখানে কাজ করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়াছে। গাল্ডন জুট প্রাডাক্টে কাজ করছে ১২ জন প্রতিবন্ধি নারী ও পুরুষ। এখানে কাজ করে তাদের সংসার চলছে ভালো ভাবে।

গাল্ডন জুট প্রাডাক্ট এর ব্যবস্থাপক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদর কাচামাল হচ্ছে ধানের খড়, পাট, হাগলা ও কচুরিপানা। আমাদের অঞ্চলে প্রচুর পাট চাষ হয় তাই এই জেলা থেকে পাট ক্রয় করা হয়। আর হাগলা কিনে আনা হয় কুমিল্লা থেকে। তিনি আরো জানান, নিজের এলাকার প্রতিবন্ধি, বৃদ্ধ, অসহায়সহ সব ধরনে মানুষ এখানে কাজ করতে পারছে।বিশেষ করে নদী ভাঙ্গন এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফুটছে।
রাজবাড়ীর বিসিক শিল্প নগরীর সহকারী মহাব্যাবস্থাপক চয়ন বিশ্বাস বলন, বিসিক থেকে প্রশিক্ষন প্রদান করে নতুন নতুন উদ্যাক্তা তৈরি করা হচ্ছে। আর গাল্ডন জুট প্রাডাক্ট এর পন্যের কারনে প্রচুর পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে। আমরা মাঝে মধ্যেই ওই কারখানাটি পরিদর্শন করি। তাদের নানান ধরনের পরামর্শ প্রদান করে থাকি।

রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান বলেন, পরিবেশ বান্ধব এসব পন্য তৈরির উদ্যাক্তাদের সব ধরনর সহযোগিতা করা হবে। কারখানার এলাকায় বৈদ্যুতিক ব্যাবস্থা ও যাতায়াতে উন্নয়নসহ বিভিন্ন দিক খেয়াল রাখা হচ্ছে। পরিবেশ বান্ধব এসব পন্য ব্যাবহারে সকলকে আগ্রহী করে তুলতে ও কাজ করা হচ্ছে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here