মোজাম্মেলহক লালটু, গোয়ালন্দঃ প্রচন্ড তাপদাহসহ সারা বছরেই ডাবের পানি শরীরের ক্লান্তি দুর করতে সহায়তা করে। তাইতো পথে ঘাটে পিপাসা মেটানোর জন্য সচেতন মানুষ বেচে নেয় ডাবের পানি। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের বাহাদুর সরদার পাড়ার আক্কাছ আলী সরদার(৬৪) দীর্ঘ ৩৭ বছর ধরে ডাব বিক্রি করে চালাচ্ছে তার সংসার।
জানাগেছে, গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৩৭ বছর ধরে ভ্যানে করে ঘুরে ঘুরে ডাব বিক্রি করে চলচ্ছে সংসার। প্রতিদিন ভোর রাতে বাড়ী থেকে বেরিয়ে ভ্যান গাড়ি নিয়ে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ও গ্রামে গিয়ে ১’ শত থেকে ২’ শত ডাব কিনে গাছ থেকে পারিয়া ভ্যানে করে শহরে নিয়ে আসে তার পর শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে ডাব গুলো বিক্রি করেন। গোয়ালন্দ দৌলতদিয়া প্রতিদিন ভ্যানে করে অনেক মানুষ ডাব বিক্রি করে থাকেন। তাদের মধ্যে সে হলো অন্যতম। দীর্ঘ দিন এই ব্যবসায় জড়িত থাকায় সে ডাব হাত নিয়ে বুঝতে পারে কোনটার কতটুকু পানি আছে। কোন ডাবের মধ্যে একটু সর বা শাঁস হয়েছে। কোন ডাবটার মধ্যে শাঁস শক্ত হয়েছে। সে প্রতিদিন ডাব বিক্রি করে ১ হাজার টাকা থেকে ১২ ‘ শত টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। এতে চলে যায় তার সংসার।
ডাব বিক্রিতা আক্কাছ আলী সরদার বলেন, আমি ৩৭ বছর ধরে ডাব বিক্রি করে চালাই সংসার। সকালে ভ্যান গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে ডাব কিনে গাছ থেকে পারিয়া নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করি। গ্রাম থেকে এক একটি ডাব কিনে আনি ৩০ টাক্ ৪০ টাকা ও৫০ টাকায়। বিক্রি করি ৬ ০ টাকা থেকে ১’ শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি করে থাকি। ডাবের ধরন বুঝে দাম রাখা হয়। এই ডাব বিক্রি করে দুই ছেলে ও এক মেয়ে বড় করে তাদের কে বিয়ে দিয়েছি। বিয়ের পরেই দুই ছেলে আলাদা হয়ে গেছে। বর্তমানে ঘরবাড়ীতে আমারা দু’জন আছি। তিনি আরো বলেন আমি এই ব্যবসার চারবার প্রশিক্ষণ দিয়েছি উপজেলায়। একবার মাখন রায়ের পাড়ায় লক্ষনদের বাড়ীতে গাছ থেকে ডাব পাড়তে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে মাস ৬ ছয়েক অসুস্থ্য হয়েছিলাম। সুস্থ্য হয়ে আবারো এই ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছি।
আরেক ডাব ব্যবসায়ী রফিক বলেন, আমি আজ ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করছি তারও বহু আগে থেকেই দেখছি আক্কাছ ভাই এই ডাবের ব্যবসা করছে। এখনো পর্যন্ত সেই ব্যবসা করে আসছেন। তার সাথে মাঝে মধ্যে বানিয়াবহ গ্রাম,বস্তপুর, আলাদিপুর, মমিন খার হাট, উদাই পুর ডাব কিনতে গেলে দেখা হয়। আবার ঘাটে ডাব বিক্রির সময় দেখা হয়ে থাকে।
ঘাট হকার সমবায় সমিতির সাধারন সম্পাদক লান্টু মন্ডল বলেন, আমি অনেক বছর ধরে দেখছি সে ফেরি ঘাট, লঞ্চ ঘাট এলাকা ভ্যানে করে ঘুরে ডাব বিক্রি করে থাকেন। আমি মাঝে মধ্যেই তার কাছ থেকে ডাব কিনে খেয়ে থাকি।আবার মাঝে মাঝেই চারটা পাঁচটা করে ডাব কিনে বাড়ীতে নিয়ে যাই। এই লোকটি অনেক পরিশ্রমী এক জন লোক।