- পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের অভুতপূর্ব আর্থ-সামাজিক ব্যাপক উন্নয়ন ও ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরার জন্য আজ সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। রাজধানীর একটি হোটেলে বিশ্ব সম্মেলন সিরিজ ২০২২ উদ্বোধনকালে তিনি এ আহবান জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বের সামনে একটি অর্থবহ টেকসই অর্থনীতির দেশ হিসেবে তুলে ধরে ব্র্যাডিং করতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে অর্থনৈতিক ও গণ-কূটনীতি একটি মুখ্য ভূমিকা পালন করে এবং দেশের ভাবমূর্তি বাড়াতে আমাদের অর্থনৈতিক কূটনীতিকে গতিশীল করা অপরিহার্য। তাই অর্থনৈতিক কূটনীতির মাধ্যমেই দেশের ভাবমূতি বাড়াতে হবে। বাংলাদেশকে একটি ব্র্যান্ড বানানোই আমাদের লক্ষ্য।’ জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা সুনাম অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্বে চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশী যুবক-যুবতীদের গতিশীল চিন্তাধারা ও ক্ষিপ্র হাতের সহায়তা দিতে আমরা আগ্রহী।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক কূটনীতি সব সময়ই তার মন্ত্রণালয়ের কর্মকা-ের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে এবং অপেক্ষাকৃত ভাল ফলাফলের জন্য দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ী-বিনিয়োগকারীদের সমন্বয়ের জন্য পররাষ্ট্র দপ্তরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও প্রযুক্তির একটি সেল রয়েছে। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অর্থনৈতিক কূটনীতির পাঁচটি অংশ নিয়ে কাজ করছে। এগুলো হলো- এফডিআই প্রবাহ বৃদ্ধি, রপ্তানীতে বৈচিত্রকরণ, মানসম্মত সেবা নিশ্চিতকরণ, মানব সম্পদ রপ্তানি ও প্রযুক্তি আমদানি ও হস্তান্তর।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশর জন্য একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড সৃষ্টির লক্ষ্যে তারা ব্যবসা ও বাণিজ্য, সুশাসন, প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য, গণমাধ্যম ও যোগাযোগ, শক্ষিা ও বিজ্ঞান, জনগণ ও মূল্যবোধ, পরিচিতি, সুনাম ও প্রভাবের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা কাজ করছি। তিনি বলেন, ‘আমি চাই, যখনই মানুষ বাংলাদেশের নাম শুনবে, তখনই তাদের চোখের সামনে অসীম সম্ভাবনাময় একটি দেশের ছবি ভেসে উঠবে।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশী ও বিদেশী উভয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও উদ্যোগ নেয়ার মতো বিপুল সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, তুলনামুলকভাবে কম জানা, অথচ বিনিয়োগের জন্য অপার সম্ভআবনাময় অ্যাগ্রো-প্রসেসিং, অটোমোবাইল, জাহাজ নির্মাণ, ফার্মাসিউটিক্যালস, নবায়নযোগ্য জ্বালানী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং নীল অর্থনীতির মতো ক্ষেত্রগুলোও আমাদের রয়েছে।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ডিজিটাল অর্থনীতি ও সুপরিচিত একটি অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। এদেশে আইসিটি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো খাতগুলোতে বিনিয়োগের অনেক জোরালো সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের জন্য যথাযথ প্রচারণায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই বিডা-বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাথে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, সেনা প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, যুক্তরাজ্যের ক্রয়ডনের মেয়র শেরওয়ান চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ড. এ বি এম আব্দুল্লাহ্।