দুবাই থেকে সাকিব আল হাসান দেশে ফেরার পর তার দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
টিভিসির শুটিংয়ে দুবাই যাবার আগে সাকিব বলেছিলেন, এই মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে জন্য মানসিক ও শারীরিক অবস্থানে তিনি নেই।
তিনি জানান, মানসিকভাবে খেলার আগ্রহ তৈরি হতে তার একটি বিরতি দরকার এবং বিসিবির সাথে আলোচনার পর, দক্ষিণ আফ্রিকায় টেস্ট সিরিজের জন্য দলে যোগ দিতে পারেন তিনি।
সাকিব আরও বলেন, সফরের ব্যাপারে ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের সাথে কথা বলেছেন। কিন্তু ইউনুস তাকে সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবতে দুই দিন সময় দিয়েছেন।
বিষয়টি ইতিবাচকভাবে নেয়নি বিসিবি। দেশের প্রতি সাকিবের প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। পুরো সিরিজের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাবার জন্য সম্মত হওয়া সত্ত্বেও, পুনরায় বিরতি চাওয়ায় সাকিবের ওপড় ক্ষুদ্ধ তিনি।
বিসিবি সভাপতির ক্ষোভের পরে, বিসিবির আরেক প্রভাবশালী পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন, সাকিবের এমন সিদ্বান্তে ক্ষেপেছেন। তিনি জানান, যেকোনও সিরিজের আগে বিতর্ক তৈরি করা সাকিব আল হাসানের অভ্যাসের অবসান ঘটাতে চায় বোর্ড।
মাহমুদ বলেন, ‘সাকিবকে যেহেতু দু’দিন সময় দেয়া হয়েছে, তাকে আসতে দিন, কথা বলে তারপর সিদ্ধান্ত নেব। আমি আশা করি, সে যাবে, কারণ সাকিবের যাওয়া আর না যাওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন এগুলো পুরোপুরি বন্ধ সময় এসেছে। যথেষ্ট হয়েছে। এমন আপনি বিসিবি চালাতে পারবেন না। তিনি খেলতে চান কি-না কেউ বলতে পারে না। কেউ খেলতে চাইলে, তাকে ঠিকঠাক খেলতে হবে। খেলতে না চাইলে বলতে হবে। আপনি যদি একটি বিরতি চান, তবে একটি বিরতি নিন. তাকে কেউ বাঁধা দেবে না। সভাপতিও তাই বলতে চেয়েছিলেন। হয়তো-বা একটু শান্ত স্বরে বলেছেন, তবে আমি জোরেশোরেই বলছি।’
সাকিবকে সিদ্ধান্ত জানাতে দুই দিন সময় দিয়েছে বিসিবি। এখন তার সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় বোর্ড। তবে খালেদ মাহমুদ বলেছেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবে বিসিবি।
মাহমুদ বলেন, ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বিসিবিই নিবে। তারা বিসিবির পন্য, বিসিবি তাদের পণ্য নয়। বিসিবি কারো জন্য নয়। অবশ্যই তারা বাংলাদেশ ক্রিকেটের মূল স্টেকহোল্ডার। কিন্তু এই স্টেকহোল্ডারের জন্য বিসিবির অনেক বিনিয়োগ করছে। অনূর্ধ্ব-১৪, ১৫, ১৮ থেকে তাদের তৈরি করতে তাদের পেছনে অনেক সময়, অর্থ ব্যয় হয়েছে বিসিবির। বিসিবি তাদের অভিভাবক। বিসিবি আমাদের সবার অভিভাবক।’
মাহমুদ আরও বলেন, ‘সাকিব-তামিম যখন খেলেন, কোন সমস্যা নেই। তারা না খেলে সমস্যা দেখা দেয়। আমরা তাদের জায়গায় অন্য কাউকে খেলাচ্ছি। কিন্তু সাকিব ফিরে এলে সেই খেলোয়াড়ের কি হবে? আমরা দল গঠন করতে পারছি না। সাকিব খেলতে না চাইলে আমাদের কিছু যায় আসে না। তার না খেলা নিয়ে বিসিবি এতটা উদ্বিগ্ন নয়। তবে প্রতিটি সিরিজের আগে তার বিরতি নেয়া উচিত নয়। যদি সে উপভোগ না করে, তবে তার এক বা দু’টি ফরম্যাট থেকে অবসর নেয়া উচিত।’
আইপিএলে দল না পাওয়ায় সাকিবের বেশি ক্ষতি হয়েছে মনে করছেন বিসিবি সভাপতি এবং অন্যান্য ক্রিকেট বিশেজ্ঞরা। তাদের ধারনা এজন্য মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সে। এটা একটা বড় কারণ হতে পারে বলেও মনে করেন মাহমুদ।
মাহমুদু বলেন, ‘শুধু সাকিব নয়, আমিও আশা করছিলাম ভালো দামে আইপিএলে বিক্রি হবে সে। আইপিএলে দলের সংখ্যাও বেড়েছে। আমি খুব অবাক হয়েছিলাম, সাকিবকে কেউ দলে নেয়নি। এটা শুধু সাকিবের জন্যই নয়, বাংলাদেশের জন্যও লজ্জার, দেশের সেরা ক্রিকেটার আইপিএলের মতো টুর্নামেন্ট খেলতে পারছেন না।’
bss