Monday, November 25, 2024

রাজবাড়ী পদ্মা নদীতে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বালু উত্তোলন ॥ ৬ ট্রলার আটক

রাজবাড়ী প্রতিনিধি ॥ হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলন ও অবৈধ ভাবে পরিবহনের দায়ে রাজবাড়ীতে বালু ভর্তি ৬ টি ট্রলার (বাল্কহেড) আটক করেছে নৌ পুলিশ।

শনিবার বেলা ১১ টার দিকে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্বেও জৌকুড়া, ধাওয়াপাড়া, চর জাজিরা থেকে উত্তোলন করা বালু নিয়ে ছেড়ে আসা বালু ভর্তি এ ট্রলার গুলো দৌলতদিয়া ৪ নং ফেরি ঘাট এলাকায় আটক করা হয়। আটককৃত ট্রলার গুলো বৈধ কাগজপত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছেন নৌ-পুলিশ সদস্যরা।
আটককৃত বালু ভর্তি ট্রালার ও চালকেরা হলেন, এমভি রিসালাত বালুবাহী ট্রলারের চালক (সুকানী) হাফিজুর রহমান, এমভি সানজিদ টাচের চালক মোঃ শহীদুল ইসলাম, আল্লাহ ভরসা ট্রলার চালক চাঁদ মিয়া, সাথী এন্টার প্রাইজ মোঃ শাহাদাত হোসেন, নবীজির দোয়া মোঃ ফারুক হোসেন, ভাই ভাই এন্টার প্রাইজ মোঃ আনোয়ার হেসেন।
এমভি রিসাকাত ট্রলার চালক হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা চরজাজিরা থেকে বালু ভর্তি করে নারায়নগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছি। দৌলতদিয়ায় আমাদের পুলিশ আটক করে কাগজপত্র চেয়েছে তাই আমরা সবাই পুলিশ ফাঁড়িতে এসেছি। আমার কি কারণে আটক করেছে জানি না।

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ থেকে পাবনার পাকশী চ্যানেল পর্যন্ত পদ্মা নদীর তলদেশ থেকে হাজার হাজার বাল্কহেড ও ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে গত ১৪ এপ্রিল থেকে ওই সব এলাকার বালুমহালকে দেওয়া লীজ বাতিল করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। জনস্বার্থে করা এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানী নিয়ে গত ২৯ মার্চ হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন, এ্যাড. হাবিব-উন নবী ও এ্যাড. মো. আশিকুর রহমান।

বিআইডব্লিউটিএর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ থেকে পাকশী চ্যানেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ১৫টি সেগমেন্টে খননের বিপরীতে শতাধিক বাল্কহেড ও ড্রেজার দিয়ে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের ফলে চ্যানেলটি বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন হুমকির মুখে পড়েছে।
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিটটি করেন, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচজন আইনজীবী। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন আদালত। রিটকারী আইনজীবীরা হলেন, ফরিদ হাসান মাহদী, মো. রাশেদুজ্জামান রানা, মো. ওয়াহিদুজ্জামান, মুরাদ মিয়া ও কাজী মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান।
পহেলা বৈশাখ বালু মহাল ইজারার মেয়াদ শেষ হলেও নতুন করে ইজারা না প্রদান করা পর্যন্ত কেউ বালু উত্তোলন করতে পারবেন না। তবে আগের মতোই বালু উত্তোলন করতে দেখা গেছে। যার যার মতো বালু উত্তোলন করে চলছে।

এদিকে, রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান গত ২৮ মার্চ বালু মহাল ইজারা প্রদানের লক্ষে পদ্মা নদীর চর জাজিরা, ফুরসাহাট, নয়নসুখ, চরনরসিংহদিয়া, খাস চরপদ্মা ও গড়াই নদীর পাতুরিয়া বালু মহাল ইজারা প্রদানের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। হাইকোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে গত ১৩ এপ্রিল পত্রিকায় পদ্মা নদীর চর জাজিরা, ফুরসাহাট, নয়নসুখ, চরনরসিংহদিয়া, খাস চরপদ্মা বালু মহাল ইজারা কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেন। তবে গড়াই নদীর পাতুরিয়া বালু মহাল ইজারা প্রদান কার্যক্রম চলমান রেখেছেন।
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া নৌ-ফাঁড়ির এসআই আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আটককৃত ট্রলার চালকদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন প্রদান করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।

 

sh/bk/rk/rj

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here