Saturday, November 23, 2024

বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ  রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া মুন্সী ইয়ার উদ্দিন আহম্মেদ বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের সময়সীমা উত্তীর্ণ হওয়ার পরও প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে ৩টি পদে নিয়োগের চেষ্টা ও বিভিন্ন দুর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের ৫জন অভিভাবক সদস্য জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
রবিবার স্কুলের অভিভাবক সদস্য বাদশা মোল্যা, শহিদুল ইসলাম, মাসুদুর রহমান, সোহেল, রিনা বেগম লিখিত অভিযোগে বলেন, নারুয়া মুন্সী ইয়ার উদ্দিন আহম্মেদ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোর্শেদা বেগম, তার স্বাসী মুন্সী আবুল কালাম শামসুদ্দিন দাতা সদস্য, দেবর ড. আবু সাঈদ রেজা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আরও ৩জন শিক্ষক প্রতিনিধি তার অনুসারী। ২০২২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তাকর্মী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী কয়েকজন ও ইতিপূর্বে সার্কুলার দেওয়ায় কয়েকজন আবেদনকারীর আবেদন পড়ে থেকে তাদের আবেদনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। ফলে ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর স্কুলে পরীক্ষা না নিয়ে রাজবাড়ী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৩টি পদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৩টি পদের ৩জন সদস্যের নিকট আগে থেকেই প্রশ্নপত্র প্রদান করার ফলে অভিভাবক সদস্য সোহেল প্রদত্ত প্রশ্নটি কোন পরীক্ষার্থী উত্তর লিখতে না পারায় পরীক্ষাটি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। কোন প্রকার রেজাল্ট তাৎক্ষনিক ভাবে প্রকাশ না করে শুধু মাত্র রেজাল্ট শীর্টের জায়গায় সবার স্বাক্ষর নেন। বিনিময়ে ডিজির প্রতিনিধি ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ৬০ হাজার টাকা নগদ প্রদান করেন অভিভাবক সদস্য সোহেলের সামনে। তিনি সচ্ছতার ভিত্তিতে পরীক্ষা হলে কেন টাকা দিতে হবে প্রতিবাদ করলে সম্মানী হিসেবে উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে রাজীব বিশ^াস, নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে গোলাম রাব্বী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাকলী বাড়ইকে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেন। বিষয়টি নিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভায় অভিভাবক সদস্যরা ৩জনকে নিয়োগের নামে অর্থ হাতানোর অভিযোগ উঠলে বিষয়টি পরবর্তী সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। পরে এভাবে কোন মিটিং না দেখিয়ে কালক্ষেপন করতে থাকেন সভাপতি-প্রধান শিক্ষক ও তার অনুসারীরা। এরই মধ্যে সরকারী নীতিমালা অনুযায়ী ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যায়।
তারা আরও অভিযোগ করেন, মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও নতুন করে পত্রিকায় সার্কুলার প্রদানের জন্য বললে উপজেলা শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানার পরামর্শে সভাপতি, প্রধান শিক্ষক, দাতা সদস্য মিলে শিক্ষক প্রতিনিধিদের ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর তারিখে একটি রেজুলেশনে স্বাক্ষর নিয়ে মেয়াদউত্তীর্ণ হলেও নিয়োগ প্রক্রিয়া চুড়ান্ত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। স্কুলের মেহগনি গাছ কর্তন করে বাড়ীতে নেওয়া, স্কুলের টিন উধাও করা হয়েছে। ৩টি পদে জমি ও নগদ টাকার চুক্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন। আমরা অভিভাবকরা সচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ চুড়ান্ত করার দাবী জানাচ্ছি।
শিক্ষক প্রতিনিধি কামাল হোসেন, আবুল কাসেম বলেন, আমাদের ব্যাক ডেটে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে। তবে যদি স্বাক্ষর করতে হয়, তাহলে রানিং ডেটে করবো বলেছি। তবে রবিবার পর্যন্ত এখনো স্বাক্ষর করিনি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোর্শেদা বেগম মোবাইলে শিক্ষা অফিসার পারমিস সুলতানার নিকট জানতে চাইলে বলেন, মেয়াদ চলে গেছে, তাতে কি হয়েছে। শিক্ষক প্রতিনিধিদের স্বাক্ষর নিয়ে আসেন আমি করে দিবো।
স্কুলের সভাপতি ড. আবু সাঈদ রেজা বলেন, কমিটি ঠিক থাকলে নিয়োগ দেওয়া যায়। এ নিয়োগ নিয়ম মতোই হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক অফিসার পারমিস সুলতানা বলেন, এ ধরণের অভিযোগ আমাকে প্রদান করেনি। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখবো। তবে এ অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।
উপজেলা চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা এসেছিলেন আমার কাছে। তারা জানান মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, আমি নতুন করে সার্কুলার দেওয়ার কথা বলেছি। অভিভাবক সদস্যরা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

sh/bk/rj

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here