Thursday, July 3, 2025

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়

ঢাকা, ২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়ে দণ্ডিত হলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালীন আদালত অবমাননার দায়ে আজ শেখ হাসিনাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা শাকিল আলম বুলবুলকে ২ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১। এই দু’জনকে গ্রেফতার বা তাদের আত্মসমর্পণের দিন থেকে এই দণ্ড কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে।

এই দু’জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. গোলাম মূর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল-১ আজ রায় দেন।

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায় বলে বাসসকে জানান চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

ট্র্যাইব্যুনালে প্রসিকিউসন পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানি করেন। এসময় অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা ও বুলবুলের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন শুনানি করেন। এছাড়া আদালত অবমাননার অভিযোগ বিষয়ে অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু) হিসেবে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামান।

‘আমার বিরুদ্ধে ২২৭টি মামলা হয়েছে, তাই ২২৭ জনকে হত্যার লাইসেন্স পেয়ে গেছি,’ বলে ‘শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের’ একটি অডিও ভাইরাল হয়। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ওই কথোপকথনের ফরেনসিক পরীক্ষা করে সেটি হাসিনার বলে সত্যতা পায়। পরবর্তীতে এই বক্তব্যের বিষয়ে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয় ট্রাইব্যুনালে।

প্রসিকিউশনের করা সে আবেদনের প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগটি গ্রহণ করে ১৫ মে’র মধ্যে তাদের জবাব দাখিলের নির্দেশ দেন। কিন্তু ১৫ মে জবাব দাখিল না করায় তাদেরকে ২৫ মে ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ২৫ মে তারা হাজির না থাকায় প্রসিকিউশনের আবেদনে শেখ হাসিনাসহ দু’জনকে আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে হাজির হওয়ার জন্য বহুল প্রচারিত দু’টি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেয়া হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর এই নির্দেশক্রমে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) এ এস এম রুহুল ইমরান স্বাক্ষরিত নোটিশটি ২৬ মে যুগান্তর ও নিউএজ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। নোটিশে ৩ জুন সকাল ১০ টায় ট্রাইব্যুনালে সশরীরে উপস্থিত হয়ে অভিযোগের বিষয়ে জবাব বা বক্তব্য দাখিল করতে বলা হয়। অন্যথায়, তাদের অনুপস্থিতিতে অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচার কার্য সম্পন্ন হবে। নোটিশের পরেও উপস্থিত না হওয়ায় বা জবাব না দেয়ার প্রেক্ষাপটে আজ উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রায় দিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। ভয়াবহতম এসব অপরাধের বিচার এখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে দু’টি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here