রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকা থেকে জাল টাকা তৈরির একটি কারখানার সন্ধান পেয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা গুলশান বিভাগ। সেখান বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে ।
এ ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি গুলশান বিভাগ। গ্রেফতারকৃতরা হলো- আব্দুর রহিম শেখ, ফাতেমা বেগম, হেলাল খান, আনোয়ার হোসেন ও ইসরাফিল আমিন।
পুলিশ জানিয়েছে,সোমবার দুপুরে বাড্ডা থানার নুরের চালা সাঈদ নগর এলাকার একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ৪৩ লক্ষ তৈরিকৃত জাল টাকাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ অভিযান সম্পর্কে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বিভিন্ন উৎসবে বিশেষ করে আসন্ন ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে জাল টাকা তৈরি চক্র, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাইকারী এদের দৌরাত্ম বেড়ে যায়। আমরা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এদের তৎপরতা রুখতে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি। আজ ডিবির ডিসি মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এ বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছি।’
তিনি বলেন,জাল টাকায় শুধু দেশবাসী প্রতারিত হচ্ছে না রাষ্ট্রও বিশাল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া ডিবি গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, অভিযানকালে আমরা কারখানাটি থেকে ১০০০ টাকা ও ৫০০ টাকা মূল্যমানের প্রায় ৪৩ লাখ তৈরিকৃত জাল টাকা, একটি ল্যাপটপ, দুইটি কালার প্রিন্টার, বিপুল পরিমাণে আঠা ও আইকা, বিভিন্ন ধরনের রং, জাল টাকা তৈরির জন্য প্রচুর কাগজ, নিরাপত্তা সুতার বান্ডেল, লেমিনেটিং মেশিন, কাটার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো সম্বলিত বিশেষ কাগজ জব্দ করেছি। যা দিয়ে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জাল টাকা তৈরি করা সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা জাল টাকা ও মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের কাজে জড়িত থেকে পূর্বেও গ্রেফতার হয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত ফাতেমা বেগম ২০১৯ সালে হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় জাল টাকার তৈরি করার সময় সহযোগীসহ হাতে নাতে ধরা পড়েছিল। কিন্তু তার স্বামী রহিম ওই সময় পালিয়ে গিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকা খুচরা এবং পাইকারি বিক্রি করতো। গত তিন বছর ধরে ঈদসহ অন্যান্য উৎসবের আগে আগে জাল টাকা তৈরির কাজে নিয়োজিত থেকে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি জাল টাকা বাজারে ছেড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।
১০০ টি কাগজের নোটের এক বান্ডেল জাল টাকা তৈরি করতে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। তৈরিকারকরা প্রতি বান্ডেল পাইকারি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। পাইকাররা আবার এ গুলোকে প্রান্তিক পর্যায়ের বিভিন্ন খুচরা বিক্রেতাদের কাছে প্রতি বান্ডেল ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে। যা রুট পর্যায়ের জাল টাকার কারবারিরা কখনো কখনো গহনা গাটি, কখনো কাপড় চোপড়, ভোজ্য পণ্য এমনকি পশুর হাটে বিক্রি করে ছড়িয়ে দিয়ে থাকে বলে জানান তিনি।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান।