Sunday, November 24, 2024

বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি

রাজবাড়ীঃ রাজবাড়ী জেলায়  বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি। এক সময় ধান ভানার এক মাত্র অবলম্বন ছিল ঢেঁকি। ধান গম, ডাউল, ভূট্টা ,মরিচ, হলুদ সহ বিভিন্ন মসলা ও পিঠা গুড়া তৈরী করা হতো ঢেঁকির সাহায্যে। গ্রামীন জীবনে এর ব্যাবহার ও প্রয়োজনিয়তা কবি সাহিত্যকদের লেখনিতে ফুটে উঠেছে।

প্রাচীনকাল থেকেই ঢেঁকির ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে আধুনিক যন্ত্রের আগমনে গ্রাম-বাংলার এই ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্তির পথে। বেশির ভাগ এলাকায় ঢেঁকি দেখা যায় না বলে নতুন প্রজন্মের কাছে অনেকটা গল্পের মত হয়ে গেছে।
ঢেঁকি মূলত পা-চালিত সরঞ্জাম। ঢেঁকি তৈরীর জন্য প্রথমে লম্বা ও সোজা একটি গাছ থেকে ১২ থেকে ১৫ ফুট লম্বা একটি গুড়ি সংগ্রহ করতে হয়। গুড়িটিকে করাতের সাহায্যে অগ্রভাগ ভারি করার জন্য একটু মোটা ও এবং পশ্চাৎ দিক তুলনা মূলক একটু চেপ্টা ও হালকা করে মূল কাঠামো( পাটা) তৈরি করা হয় কাঠামোর পশ্চাৎ দিকে ছিদ্র করে আরেকটি গোলাকার কাঠ ঢুকিয়ে দুপাশে দুই খাঁড়া কাঠে আটকে দেওয়া হয় । অন্যপাশে একটি খুঁটির মতো অংশ থাকে। এই খুঁটি গর্তে থাকা শস্যদানার খোসা ছাড়ানো ও গুঁড়া করার কাজে ব্যবহৃত হয় ।

প্রবীণেরা বলছেন, রাজবাড়ীর প্রতিটি উপজেলার গ্রামাঞ্চলের মানুষ একসময় ধান ভানার জন্য ঢেঁকির ওপর নির্ভরশীল ছিল। তখন প্রায় প্রতিটি গেরস্থের বাড়িতেই ঢেঁকি ছিল। ঢেঁকির জন্য থাকত আলাদা ঢেঁকিঘর। গ্রামের বধূরা ভোররাত থেকেই ধান ভানা শুরু করত। ঢেঁকির ঢাঁকুর-ঢেঁকুর শব্দে বাড়ির অন্য সবার ঘুম ভাঙত। নারীরা ঢেঁকিতে কে কত পাড় দিতে পারে, সেই প্রতিযোগিতাও চলত। গ্রামীণ বধূদের আলতারাঙা পায়ের স্পর্শে ঢেঁকিও যেন নেচে-গেয়ে উঠত!

প্রতিবছর গ্রামগুলোতে ঢেঁকিতে পাড় দিয়ে চাল গুঁড়ো করা উৎসবে রূপ নিত। ঢেঁকিতে ভানা আটা দিয়ে ভাপা, পাটিসাপটাসহ নানা ধরনের পিঠা-পুলি তৈরি করা হতো। তবে উপজেলার গ্রামে এখনো কিছু ঢেঁকির দেখা মিললেও এর ব্যবহার কমে গেছে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here