মোজাম্মেলহক, গোয়ালন্দ সংবাদদাতাঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাটে কর্তব্যরত অবস্থায় শাজাহান শেখ (৬০) নামের এক পরিবহন শ্রমিককে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। পূর্বের বিরোধের জের ধরে শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এসময় তার অবস্থা আশংকাজনক হলে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। তিনি গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কছিমদ্দিন সরদার পাড়ার রসমদ্দিন শেখ এর ছেলে।
শাজাহান শেখ এর স্ত্রী জোহুরা খাতুন জানান, ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসের ঘাট প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তার স্বামী শাজাহান শেখ। এর আগে ওই গাড়িটির ঘাট প্রতিনিধি হিসেবে তার এক নিকট আত্মীয় দায়িত্ব পালন করতেন। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ্য থাকায় মামা শাজাহান শেখ কয়েক দিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এ নিয়ে দুই সপ্তাহ আগে গাড়ির ঘাট প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য গোয়ালন্দ পৌরসভার দেওয়ান পাড়ার ওবায়দুর নামের এক যুবক জোড় চেষ্টা করছিলেন। এ নিয়ে ওই সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট কফিল উদ্দিন পেট্রোল পাম্পের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ওবায়দুর অপর এক সঙ্গী সাথে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শাজাহান শেখের বুকে ও পিঠে কয়েকটি কোপ দেয়। এসময় পেট্রোল পাম্পের সামনে দিয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশের একটি টহল দল যাচ্ছিলেন। পুলিশের গাড়ি দেখে শাজাহান শেখ দৌড়ে সাহায্য প্রার্থনা করে। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে দ্রুত গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
এদিকে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে।
আহত পরিবহন শ্রমিক শাজাহান শেখ এর ছেলে নিলয় আহম্মেদ রানা বলেন, তার বাবার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তাকে আজ রোববার দুইবার রক্ত দিতে হয়েছে। আরো রক্ত দেওয়া লাগবে। পৌরসভার দেওয়ান পাড়ার ওবায়দুর খুবই খারাপ প্রকৃতির ছেলে। আমরা এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার এসআই মনিরুল মিয়া বলেন, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটা বা পৌনে একটার দিকে তিনি ঘাটে ডিউটি করতে যাচ্ছিলেন। পেট্রোল পাম্পের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় এক ব্যক্তি দৌড়ে এসে সাহায্য চায়। এসময় তার শরীর দিয়ে রক্ত ঝড়ছিল। পরে তাৎক্ষনিকভাবে গাড়ি ঘুরিয়ে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এসময় তার থুতনির নিচে, বুকের বাম পাশে এবং পিঠে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ পাওয়া যায়। তবে বুকের বাম পাশের আঘাতের ক্ষত বেশি গভির ছিল। রাতেই অভিযুক্ত ওবায়দুরকে ধরতে অভিযান চালানো হয়। পলাতক থাকায় এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।