Saturday, November 23, 2024

আমি একটি ঔষধ কোম্পানির এস আর

মোজাম্মেল হক লালটু, গোয়ালন্দ: আমি একটি মধ্য বিত্তের ঘরের ছেলে লেখা পড়া শিক্ষিয়ে একটি ঔষধ কোম্পানিতে এস আর হিসাবে চাকরী করছি। পরিবারপরিজন নিয়ে কোন রকম ভালো আছি। খুব ভোরে বাসায় থেকে বেরিয়ে যাই গভীর রাতে বাসায় ফিরি । ছেলে মেয়েদের সাথে মাঝে মধ্যে দেখা হয় এই হলো ঔষধ কোম্পানির চাকরী ।

জানাগেছে, আমাদের ঔষধ কোম্পানির চাকরীটা এমন যে খুব সকালে অফিসে গিয়ে সকল পাটির ঔষধ গুলো আলাদা আলাদা কাটুনে করে বিভিন্ন বাজারে পাটির নিকট পৌঁছেয়ে দিয়ে ক্যাশ নিয়ে এসে কোম্পানিতে গিয়ে জমা দিতে হয়। প্রতিদিন খুব সকালে বাসা থেকে বেরি আসি আবার গভরি রাতে বাসায় ডুকি। ছেলে মেয়েদের সাথে সহজে দেখা মিলে না। আমি যখন রাতে বাসায় ডুকি তখন ছেলে মেয়ে রা ঘুমিয়ে থাকে। আবার যখন বাসা থেকে খুব সকালে বেড়িয়ে যায় তখন ওরা সবাই ঘুমিয়ে থাকে। সে কারনে তাদের সাথে দেখা হয় না। এই হলো কোম্পানির এস আর এর চাকরী ঝড়, বৃষ্টি, রোদে ছুটে চরতে হয় তাদের। পরিবার পরিজনদের সাথে সময় কাটানো কোন সুযোগ নেই তাদের। তাদের সাথে সময় কাটাতে গেলে চাকরী থাকবে না। অফিসে যাওয়া দেরি হলে বস এর মুখের কথা শুনতে । কিছুই করার নেই কোম্পানি নিয়ম মেনেই চাকরী করতে হয়। নিয়ম মেনে চাকরী করতে না পারলে কোম্পানি আপনাকে বাদ দিয়ে দেবে। চাকরী না করতে পারলে কিরে সংসার চালবে। তাই যত কষ্ট হোক না কেন কোম্পানির নিয়ম মেনেই কাজ করি।

একটি ঔষধ কোম্পানির এস আর আলিম বলেন, কি বলবো আমাদের কথা ভাই । আমরা যে চাকরী করি তা অনেক কষ্টের চাকরী । কোন দিনও সকালে বাসা থেকে নাস্তা খেয়ে আসতে পারি না। আমি যে ভোরে বাসা থেকে বেরিয়ে অফিসে যাই সে সময় বাসার সবাই ঘুমিয়ে থাকে। বাহিরে বেরিয়ে কোন হোটেলে সকালের নাস্তাটা খেয়ে অফিসে গিয়ে পাটির ঔষধ গুলো মিলিয়ে সে সকল ঔষধ নিয়ে বিভিন্ন মার্কেটে চলে । সে সকল মার্কেট থেকে গুরে আসতে অনেক রাত হয়ে যায়। তারপর অফিসে এসে হিসাব নিকাশ শেষ করে বাসার দিকে ফিরতে গভীর রাত হয়ে যায়। এই দেখেন বৃষ্টি ভিজে সকল ঔষধের দোকানে ঔষধ দিয়ে আসলাম। এখন এই বাজার থেকে অন্য বাজারে যাব । আমরা এস আররা যে কষ্ট করি সে তুলনায় কোম্পানি আমাদের তেমন বেতন দেন না। আমাদের কষ্ট কেউ বুঝে না । মাঝে মধ্যে বাসায় ছেলে মেয়েদের সাথে দেখা হয়।

আরেক কোম্পানির সেল রিপ্রেজেন্টেটি, বিক্রি প্রতিনিধি বলেন, আমি আজ নয় বছর একটি ঔষধ কোম্পানিতে চাকরী করি । সকাল ৮টা হতে ৮টা ৩০ মিনিটের মধ্যে বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে হয়। প্রথমে হসপিটালে যেতে হয়। হসপিটালের কাজ শেষ করে বিভিন্ন মার্কেটে গিয়ে ঔষদের দোকানে দোকানে অর্ডার নিতে হয় । কাজ শেষ করে আসার পর ঔষধের ওডার গুলো আবার অফিসে পাটানো হয়। আমরা সারাদিন মোটর সাইকেলে করে গুরে গুরে এ সকল কাজ করি। দিন শেষে বাসার ফিরার পর অফিসিয়াল কিছু সিট পূরণ করে অফিসে পাঠাতে হয়। তখন ক্লান্ত শরীলে কোন কিছু করতে ইচ্ছে করে না। তার পর কাজ করতে হবে সময় মত কাজ না করলে কোম্পানি উদ্ধুতম কর্মকর্তারা আমাকে কথা শোনাবে । সে জন্য রাত জেগে হলেও কাজ সম্পন্ন করতে হবে। কোম্পানির চাকরী মানেই অনেক কষ্টের চাকরী। আমি যে ঔষধ কোম্পােিত চাকরী করি সেখান থেকে যে বেতন পাই তাতে বাসা ভাড়া দিয়ে কোন রকম সংসার চালাতে চলতে পারছি। আবার বছর শেষে কোম্পানির লাভ্য অংশ থেকে কিছু টাকা আমাদের দেয় তাতে আমি কিছুটা ভালো আছি। এই সুবিধা গুলো সব ঔষধ কোম্পানির আবার নেই কিছু কিছু কোম্পাি তে আছে।

গোয়ালন্দ উপজেলার ঔষধ কোম্পানির সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভ এর সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমারা যারা ঔষধ কোম্পানি গুলোতে চাকরী করি তাদের সবাইকে অনেক কষ্ট করতে হয়। সকাল ৮টা মধ্যে বাসা থেকে বেরি যেতে হয়। আর রাত ১০ থেকে১১টা পর বাসা ফিরতে হয় এই হলো আমাদের জীবন। রোদ ,বৃষ্টি,ঝড় যাই হোক না কেন আপনার কাজ করতেই হবে। কাজ না করলে চাকরী থাকবে না। চাকরী না থাকলে আপনার সংসার চলবে না।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here