ব্লুমফন্টেইন (দক্ষিণ আফ্রিকা) : অধিনায়ক তেম্বা বাভুমার সেঞ্চুরিতে এক ম্যাচ বাকী রেখেই বিশ^ চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে হারিয়েছে সফরকারী ইংল্যান্ডকে। বাভুমা ১০৯ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন।
এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়েও গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ওয়ানডেতে ২৭ রানে জয় পেয়েছিলো প্রোটিয়ারা। এই ম্যাচ পেয়ে আসন্ন ওয়ানডে বিশ^কাপে সরাসরি খেলার দৌঁড়ে ভালোভাবেই টিকে থাকলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
ব্লুমফন্টেইনে টস জিতে প্রথমে বোলিং করতে নামে দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট হাতে ভালো শুরু পায়নি ইংল্যান্ড। দলীয় ৩৩ রানের মধ্যে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান দুই ওপেনার জেসন রয় ও ডেভিড মালান। প্রথম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করা জেসন রয়কে ৯ রানে বিদায় করেন পেসার লুঙ্গি এনগিদি। আরেক পেসার ওয়েন পার্নেলের শিকার হন ১২ রান করা মালান।
এরপর মিডল-অর্ডার ব্যাটারদের দৃঢ়তায় শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠে ইংল্যান্ড। তৃতীয় উইকেটে বেন ডাকেটকে নিয়ে ৪৯ রান যোগ করার পর অধিনায়ক জশ বাটলারের সাথে ৭৩ রান তুলেন হ্যারি ব্রুক। ততক্ষণে ইংল্যান্ডের রান দেড়শ অতিক্রম করে।
ডাকেট ২০ রানে ফিরলেও, ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান ব্রুক। দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনার আইডেন মার্করামের শিকার হয়ে ৮০ রানে আউট হন তিনি। ৭৫ বল খেলে ৭টি চার ও ৪টি ছক্কা মারেন ব্রুক।
পঞ্চম উইকেটে শতরানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের বড় সংগ্রহের পথ তৈরি করেন বাটলার ও মঈন আলি। ৮৫ বলে ১০১ রান যোগ করেন তারা। মঈনকে ৫১ রানে থামিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন নর্টি।
মঈনের বিদায়ে ক্রিজে এসে ১৪ রানের বেশি করতে পারেননি ক্রিস ওকস। তবে সপ্তম উইকেটে বাটলারের সাথে দলের স্কোরে ৩৪ বলে ৫৪ রান জমা করেন স্যাম কারান। ১টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৭ বলে ২৮ রান করেন কারান।
ইনিংসের শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে ইংল্যান্ডকে ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ৩৪২ রানের বড় সংগ্রহ এনে দেন বাটলার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান ইংল্যান্ডের। ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮২ বলে ৯৪ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন এই ইনিংসে ২৩তম অর্ধশতক করা বাটলার। দক্ষিণ আফ্রিকার নর্টি ৬৪ রানে ২ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ৩৪৩ রানের বড় টার্গেটে ভালো সূচনা পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ১২ ওভার ব্যাট করে ৭৭ রান যোগ করেন কুইন্টন ডি কক ও অধিনায়ক তেম্বা বাভুমা। ডি কককে ৩১ রানে থামিয়ে ইংল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন পেসার ওলি স্টোন।
ডি ককের বিদায়ের পরও দক্ষিণ আফ্রিকার রান তোলায় ভাটা পড়েনি। দ্বিতীয় উইকেটে ৯১ বলে ৯৭ রান যোগ করেন বাভুমা ও গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করা রাসি ভ্যান ডার ডুসেন। এই জুটিতেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান বাভুমা। তিন অংকে পা রাখার পর পর কারানের বলে বোল্ড হয়ে ১০৯ রানে বিদায় নেওয়া বাভুমা ১০২ বল খেলে ১৪টি চার ও ১টি ছয় মরেন ।
বাভুমার ফেরার ৯ বল বল থামেন ডুসেনও। স্পিনার আদিল রশিদের শিকার হয়ে ৩৮ রান করে ফেরেনে ডুসেন। এরপর চতুর্থ উইকেটে হেনরিচ ক্লাসেনকে নিয়ে ৫৫ ও পঞ্চম উইকেটে ডেভিড মিলারের সাথে ৪৯ রান যোগ করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াইয়ে রাখেন মার্করাম।
মার্করাম ৪৯ ও ক্লাসেন ২৭ রানে আউট হলেও, দক্ষিণ আফ্রিকার ভরসা ছিলেন মিলার। ৫ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ৮ ওভারে ৫৯ রান দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার।
ষষ্ঠ উইকেটে ৪৭ বলে ৬৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুর্দান্ত জয়ের স্বাদ দেন মিলার ও মার্কো জানসেন। ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৩৭ বলে ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন মিলার। ২৯ বলে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন জানসেন। ১টি করে চার-ছয় মারেন জানসেন। ইংল্যান্ডের স্টোন-রশিদ ২টি করে উইকেট নেন।
আগামী পহেলা ফেব্রুয়ারি কিম্বার্লিতে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে।
সূত্রঃ ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ (বাসস/ক্রিকইনফো)