Friday, October 11, 2024

উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ

উজ্জল হোসেন, পাংশা: রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের উপনির্বাচন কে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও সমর্থকদের উপর হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায়দুই গ্রুপের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি শূন্য রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পাংশা উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়োর ছেলে খন্দকার তাসবীর হাসান সিসিল ও মাছপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ সুজা উদ্দিন মৃধা।

উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো ও সুজা উদ্দিন মৃধার মধ্যে গ্রুপিং সৃষ্টি হয়। গতকাল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে পাংশা সরকারি কলেজ মাঠে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় মাছপাড়া ইউনিয়ন থেকে দুই গ্রুপ আলাদা আলাদা ভাবে মোটরসাইকেল ও অটোভ্যান যোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার সময় মাছপাড়া ইউনিয়নের পেঁয়াজ হাঠ এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

মাছপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সুজা উদ্দিন মৃধা বলেন, আমি দীর্ঘ নয় বছর মাছপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পালন করছি। পাংশা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদ শূন্য রয়েছে। এ ইউনিয়নে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপনির্বাচনে আমি একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছি। খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো তার ছেলে খন্দকার তাজবীর হাসান সিসিলকে মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে আমার কর্মী সমর্থকদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। গতকাল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে বাড়ি ফেরার পথে মাছপাড়া বাজার থেকে খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো এবং তার ছেলে তাজবীর হাসান সিসিলের উপস্থিত থেকে আমাদের কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা করে। আমাদের একজন সমর্থকের একটি মুদি দোকান আরেক জন সমর্থকের একটি বেকারীতে ভাংচুরের হয়। এ সময় আমাদের সমর্থক মাছপাড়া ইউনিয়নের ছবুর মন্ডলের ছেলে তপু মন্ডল, আরশেদ শিকদারের ছেলে আরজু সরদার, আবুল মন্ডলের ছেলে মিরাজ মন্ডল আহত হয়।

পাংশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান খন্দকার সাইফুল ইসলাম বুড়ো বলেন, তাদের অভিযোগ সম্পন্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি দীর্ঘ ২৫ বছর মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। এবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। তাদের কোন কর্মী সমর্থকই নাই। গতকাল টাকা দিয়ে ৫০-৬০ মোটরসাইকেল ভাড়া করে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাদের লোকজনই আমাদের কর্মী সমর্থকদের উপর হামলা করে। এ সময় সমর্থক মো. সুলতান শেখের ছেলে জিহাদ শেখ ও হাসান শিকদারের ছেলে আলামিন শিকদার আহত হয়। আমি এবং আমার ছেলের জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্য তারা এই মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে ।

এমন একটি ঘটনা ঘটতে পারে বলে, আমি দুদিন আগেই পাংশা মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জকে জানিয়েছিলাম। পাংশা মডেল থানার উপ পরিদর্শক মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পর আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তারপর থেকে এখনো ওই অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। দুই পক্ষই অভিযোগ দেবে বলে জানিয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শারমিন আহম্মেদ তিথি জানান, গতকাল একটি মারামারির ঘটনায় হাসপাতালে দুজন ভর্তি রয়েছে।

মাছপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদটি শূন্য হওয়ার পর উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে কি না বিষয়টি জানার জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে গেলে নির্বাচন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here