Tuesday, November 12, 2024

পাটের দাম নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় কৃষক

মোঃ আমিরুল হক: রাজবাড়ীর বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতে ব‍্যাপকহারে উঠতে শুরু করেটে সোনালী আঁশখ‍্যাত পাট। কৃষকেরা হাট বাজারে বিক্রির জন‍্য নিয়ে আসছেন তাঁদের উৎপাদিত পাট। তবে হাট বাজারগুলোতে যে দর পাচ্ছেন, তাতে সন্থুষ্ট নন তারা। চাষের খরচ নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা।

তবে পাটের ক্রেতারা বলছেন, এবারে পাটের গুণগত মান সঠিক না থাকায় দাম কম পাচ্ছেন চাষিরা।

জেলার গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী সদর, কালুখালী, পাংশা এবং বালিয়াকান্দি উপজেলার প্রতিটি হাট বাজারে ব‍্যাপকভাবে উঠতে শুরু করেছে পাট। পাটের সঠিক দাম না পাওয়ায় দুঃশ্চিন্থার পড়েছেন চাষিরা। কারণ সময়মতো পাট জাগের পানি না পাওয়ায় অধিক মূল‍্যের ডিজেলচালিত শ‍্যৃলো মেশিন দিয়ে ভূগর্ভস্ত থেকে পানি তুলে দিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে। এতে বেড়েছে তাদের খরচ। পাটের বাজার হিসেবে খ‍্যাত জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর হাট। সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার এখানে হাট বসে। এখানে বহরপুর, বাড়াদী, শেকাড়া, নারায়ণপুর, হুলাইল, বংকুর, ডহর পাঁচুরিয়া, পাঁকালিয়া, সারুটিয়া, ভাতছালা, করমচাঁদপুর, রাজধরপুর, বাওনাআ, দিয়ারা, খালকুলা, নতুননগর, রামদিয়া, কুড়িপাড়া, দিলালপুর, তেঁতুলিয়া, খাটাগ্রাম, কড়চাডাঙ্গী, হোগলাডাঙ্গী, নবাববাড়ী, দোপপাড়া, ঘোড়ামারা, পাঁকুরিয়া, আনন্দবাজা, গোবিন্দপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তাঁদের উৎপাদিত পাট নিয়ে আসেন বিক্রি করতে। এখানে সরকারি – বেসরকারি কয়েকটি পাট ক্রয় কেন্দ্র রয়েছে এই হাটে। সরেজমিনে দেখা গেছে, এই বাজারে প্রতি হাটে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার মণ পাট নিয়ে আসে বিক্রি করার জন‍্য। বর্তমানে বহরপুর হাটে প্রতি মণ পাট বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৭৫০ টাকা দরে। কৃষকগণ তাঁদের পাটের দাম কম হওয়ায় হিমশিম খাচ্ছে চাষিরা। তবে পাটের ক্রেতারা বলছেন, পাটের গুণগত মান সঠিক না হওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে কৃষকগণ। পানির সমস‍্যার কারনে এবার পাটের রং এবার নষ্ট। হয়েছে। যে কারণে পাট কিনতে পারছেন না তারা।

বহরপুর বাজারে পাট নিয়ে আসা কৃষক আঃ হামিদ, রজ্জব আলী, ওসমান গণী, আব্দুল হাই জানান, যে দামের আশায় হাটে পাট নিয়ে এসেছি তা মিলছে না, পাটের উৎপাদন খরচ বাড়ছে, বাজারে নিত‍্যপণ‍্যের দাম যে হারে বেড়েছে সংসার চলবে কীভাবে।

আনোয়ার হোসেন বলেন, পানি না থাকায় পাটের জাগ দিতে অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। সে অনুযায়ী দাম পাওয়া যাচ্ছে না, এঅবস্থায় খরচের টাকাও উঠবে না।

এই বাজারের পাট বিক্রেতারা বল্রন, প্রতি বছরের তুলনায় এই বছরে পাট উৎপাদনে খরচ বেড়েছে অনেক বেশি। পাট জাগ দেওয়ার পানি সংকটের জন‍্য আমরা বিপদে পড়েছি।

বহরপুর বাজারের পাট ব‍্যবসায়ী মোঃ আবুল কালাম বিশ্বাস, মোঃ সেলিম বিশ্বাস, মোঃ মাছেম আলী, শ‍্যামল কুমার দাস জানান, পাটের বাজারের জন‍্য বহরপুর হাটের আগাগোড়াই একটি সুনাম রয়েছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রান্থিক চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত পাট এখানে বিক্রি করতে নিয়ে আসে। কিন্তু পানিসংকটে এবারে পাটে সোনালী রং আসেনি। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা।

পাট ব‍্যবসায়ী মোঃ আশিক আলী বিশ্বাস ও মোঃ হেকমত ভদ্র বলেন, এই বাজারে সরকারি বেসরকারি পাটকল কর্তৃপক্ষের এজেন্ট রয়েছে, তাঁরা চাষিদের নিকট থেকে সরাসরি পাট ক্রয় করে থাকেন। কিন্তু পানিসংকটে এবছরে পাটের ভালো রং না হওয়ায় কৃষক পর্যায়ে সোনালী আঁশের তেমন দাম পাচ্ছেন না।

বালিয়াকানদি উপজেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ও পাট বাজার সংলগ্ন বাসিন্দা রোমানা কবির বলেন, পাট উৎপাদনে আমাদের বালিয়াকান্দি উপজেলা মোটামুটি এগিয়ে। এখানে গোল্ডেন ফাইবারটা ভালো হয়। কৃষকগণ আবাদ ভালো করেছেন, উৎপাদনও ভালো হয়েছে। কিন্তু পাটের জাগ দেওয়ার সমস‍্যার কারনে রং ভালো আসেনি। যে কারনেই চাষি পর্যায়ে দাম ভালো পাচ্ছেন না। এতে শুধু চাষি নন, পাটের সাথে সম্পৃক্ত (ব‍্যবসায়ী, মিল, কারখানা) সবাই আর্থিক ক্ষতির মূখে পড়বে। বিশেষ করে পাটের সোনালী আঁশ এবছেরে পানি সংকটের কারণে না পাওয়া যাওয়ায় এসকল সমস‍্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here