গ্রেফতার হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ২টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৩০শে জুলাই(শুক্রবার) রাজধানীর গুলশান থানায় র্যাব-১ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করে , ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।
তিনি জানান, হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছে। এছাড়াও বিশেষ ক্ষমতা আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনসহ চারটি ধারায় আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাসভবনে অভিযান শুরু করে র্যাব। দীর্ঘ চার ঘণ্টা অভিযান শেষে রাত ১২টার দিকে তাকে আটক করা হয় এবং পরে র্যাব সদরদফতরে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান শেষ করেন র্যাব , চার ঘণ্টার অভিযান শেষে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, ‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় আমরা অভিযান চালিয়েছি। হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসা থেকে বিদেশি মদ, বিদেশি কারেন্সি, হরিণের চামড়া, ক্যাংগারুর চামড়া, ওয়াকিটকি সেট এবং ক্যাসিনো খেলার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও পশু সংরক্ষণ আইন ছাড়াও তার নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হবে।’
হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটকের পর তার মালিকানাধীন জয়যাত্রা আইপি টিভি ও জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন ভবনে অভিযান চালিয়েছে র্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা থেকে এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন র্যািবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাদির শাহ।
তিনি জানান, জয়যাত্রা টেলিভিশনের কোনো বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। কিছু কাগজপত্র পাওয়া গেছে, সেগুলো যাচাই-বাছাই করে টেলিভিশনটি বন্ধ করা হতে পারে। টেলিভিশনটিতে কর্মী নিয়োগে বাণিজ্যের অভিযোগও তদন্ত করা হচ্ছে।
চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয়া হবে কি-না জানতে চাইলে র্যাবের এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘অধিকতর তদন্ত করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তদন্ত করে যদি বৈধ কাগজপত্র না পাওয়া যায় তাহলে চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয়া হবে।’
সম্প্রতি ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসে। সেই কারণেই তাকে উপকমিটির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ থেকে গত রোববার হেলেনা জাহাঙ্গীরকে অব্যাহতি দিয়ে আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উপকমিটির সদস্যসচিব ও আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ সই করেন। এতে বলা হয়, হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড সংগঠনের নীতিবহির্ভূত হওয়ায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্যপদ হতে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।