রাজবাড়ী প্রতিনিধি: ছেলে রুবেল মন্ডল ওরফে মোয়া (২৬) কে সভেন আপের সাথে সাথে ঘুমের ঔষদ খাইয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে পানিতে ফেলে দিয়েছিলো বাবা। গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছে এমনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন গ্রেফতার বাবা খলিলুর রহমান ।
গত ২৪ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ভোর ৬ টায় রাজবাড়ীর কালুখালি উপজেলার মোহনপুর রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রাস্তার দক্ষিণ পাশে ধান ক্ষেতের পানির মধ্যে থেকে মানষিক প্রতিবন্ধী রুবেল মন্ডল ওরফে মোয়া’র মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় রুবেলের মামা দেলোয়ার হোসেন দিনু বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামাদের আসামি করে কালুখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। কালুখালি থানার মামলা নং- ১৩
পুলিশ জানায়,খলিলুর রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে জন্ম নেয় রুবেল। তবে রুবেলকে সন্তান হিসেবে মেনে নেননি খলিলুর রহমান। এরপর খলিলুর দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন। দ্বিতীয় স্ত্রী আরেকটি বিয়ে করেন। এরপর থেকেই রুবেল তার নানির কাছে বড় হতে থাকে।
১৫ বছর পর্যন্ত সুস্থ থাকলেও পরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন রুবেল। এরপর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন তিনি। প্রায় প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতেন আর রাতে ফিরতেন। কিন্তু গত ২৩ আগস্ট বুধবার বিকেল থেকে আর তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
পরদিন বৃহস্পতিবার ভোরে কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকার একটি ধানখেতে অজ্ঞাত একটি মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে রুবেলের স্বজনরা মরদেহটি রুবেলের বলে শনাক্ত করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তদন্তে বের হয়ে আসে হত্যাকাণ্ডের সাথে রুবেলের পিতা খলিলুর জড়িত। পরে অভিযান চালিয়ে ১৬ই সেপ্টেম্বর ১০টার দিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আত্নগোপন থাকার জন্য খলিলুর সেখানে একটি দোকানে কাজ করতো । পরদিন তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কালুখালির অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রানবন্ধু বিশ্বাস জানিয়েছেন, রুবেলকে সেভেন আপের সাথে সাথে ঘুমের ঔষদ খাইয়ে প্রথমে অজ্ঞান করা হয়। পরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। গ্রেফতারের পর রুবেলের পিতা খলিলুর হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার জি.এম. আবুল কালাম আজাদ বলেন, কালুখালি থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর থেকেই গুরুত্বের সাথে কাজ শুরু করে পুলিশ । যেহেতু এটি একটি ক্ল্যুলেস মামলা । পুলিশ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে নিহত রুবেলের পিতাকে গ্রেফতার করেছে। পারিবারিক অন্তঃদ্বন্দ ও সম্পত্তির ভাগাভাগি নিয়ে এ হত্যার দায় স্বীকার করেছে নিহত রুবেলের বাবা খলিলুর । এ হত্যা কাণ্ডের সাথে অন্য কেউ যুক্ত আছে কি-না সে বিষয়ে আমরা তদন্ত করে দেখবো ।’