Friday, May 3, 2024

জায়গা দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

বালিয়াকান্দি প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দুবলাবাড়ীয়া গ্রামে বিধবা নারী ও এতিম সন্তাদের জমি জবরদখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার ৮ জুলাই দুপুরে উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাড়ী নিজ বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মৃত আব্দুর রহমানের স্ত্রী শাহিমা বেগম।

এসময় তিনি অভিযোগ করে বলেন ২০০১ সালে আমার স্বামী মৃত‍্যূবরণ করেন। আমি আমার এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে চরম অসুবিধায় পরি। আমার স্বামী দেবর, ভাসুর, ননদ মিলে ৬ ভাই ২ বোন। আমার স্বামী মৃত‍্যূবরণ করার পর থেকেই পরিবারের অন‍্যান‍্য সদস‍্যগণ আমার স্বামীর পৈত্রিক ভিটা জবর দখলের পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়। আমি একা বিধবা অসহায় মহিলা মানুষ হওয়ার সুবাদে আমার উপর বিভিন্ন প্রকার মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন। আমি আমার এতিম দুই সন্তানদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়ি। অসহনীয় যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে ২০০১ সালেই সন্তানদের নিয়ে দক্ষিণবাড়ী আমার ভাইয়ের বাড়ীতে চলে আসি। ছেলে মেয়েদের অতি কষ্টে মানুষ করে ছেলেকে প্রবাসে পাঠাই এবং মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেই।

আমি চলে আসার পর আমার স্বামীর পৈত্রিক ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে জবর দখল করতে আমার ভাসুর, দেবর, ননদ মিলে বসত ভিটার ঘর ভেঙ্গে আনতে বাধ‍্য করে। আমার ঘর সরানোর পর আমার স্বামীর ভিটা সম্প্রতি দখলে নিয়ে অবৈধভাবে ছাপড়া ঘর উত্তোলন করে বেড়া দিয়ে রেখেছে আব্দুর রহিম।

আমার স্বামী আব্দুর রহমানের পৈত্রিক সম্পত্তি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলাধীন নবাবপুর ইউনিয়নের ৯নং ইন্দুরদী মৌজার দুবলাবাড়ী গ্রামে। ১৭৩নং খতিয়ানে ৮৩১,৮৩২,৮৩৩,৮৩৪, ,৮৩৫,৮৩৬,৮৩৭,৮৩৮,৮৩৯ ৮৪৩ ও ৯৯৩ মোট ১১ টি দাগে ৩ একর ৬২ শতাংশ জমি রয়েছে। এরমধ‍্যে ৮৩৪ ভিটা ২৩ শতাংশ ও ৮৩৫ বাড়ী ৩৬ শতাংশ। বাদ বাঁকি মাটিয়াল ও নাল জমি। গত ১৪ জুন ২০২৩ ইং তারিখে গোপনে আবু তাহেরের ছেলে আব্দুর রহিম আমার ননদ ফিরোজা বেগম স্বামী ওসমান এর নিকট থেকে মোট ১১ দাগে ১২ শতাংশ জমি ২৮৪৬ নং কবলা দলিল করে। ফিরোজার নিকট থেকে ১২ শতাংশ জমি ১১ দাগ থেকে ক্রয় করেই আমার স্বামীর পৈত্রিক ভিটা জোরপূর্বক দখল করে নেয় আব্দুর রহিম। আমার ননদ ফিরোজা বাড়ীর দাগ থেকে জমি পাবে ২ শতাংশের একটু বেশি। অথচ রহিম আমার স্বামীর ভিটা বাড়ী দখল করে ঘর উত্তোলন করেছে। আমি আমার এতিম ছেলে মেয়ে নিয়ে রয়েছি চরম বিপাকে।

আমার ভিটায় যেদিন ছাপড়া ঘর উত্তোলন করতে যায়, আমি সংবাদ পেয়ে মেয়েকে নিয়ে সেখানে গেলে রহিম, আবুল হোসেন, ফিরোজা বেগম, হারুন, ওয়াহিদ, আবু তাহের, লিটু, জামাল, মিরাজ, তুলি, বুলি, বর্সা ও সিরাজসহ তাদের সংঘবদ্ধদল আমাদের উপর চড়াও হয়ে। অকথ‍্যভাষা প্রয়োগসহ মারতে আসলে প্রাণ ভয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে আসি। তারা আমাদের পূর্বের পাকা করা ইটের উপর ছাপড়া নির্মাণ করে মালিকানা সাইনবোর্ড উত্তোলন করেছে। আমাদের চাওয়া ফিরোজা বেগম যেখানে যেখানে জমি পাবে সেখান থেকে দলিল গ্রহীতা আব্দুর রহিম ক্রয় করেছে দখল করুক। যেহেতু ফিরোজা মেয়ে সে সামাজিকভাবে নাল জমি পাবে। বাড়ীতে বসবাসের জন‍্য ছেলেরাই পেয়ে থাকে। অথচ আব্দুর রহিম গোপনে ফিরোজার নিকট থেকে লিখে নিয়েই নামজারীর অনলাইন আবেদন করেছেন। আমি জানতে পারার পরে থানায় অভিযোগ করি এবং যেহেতু বিষয়টি জমি সংক্রান্ত তাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মহাদয়কে লিখিতভাবে অবহিত করি। মূলত আমার শ্বশুর মৃত সেকেন্দার আলীর ইন্তেকালের পর তার সম্পত্তির ওয়ারিশ হন আমার শ্বাশুরি ফুলবানু তাদের ছেলে আবুল খায়ের, আবুল কাশেম, আবু তাহের, আবুল হোসেন, আব্দুর রহমান, আব্দুল মজিদ, ফিরোজা বেগম ও হোসনেয়ারা বেগম। ওয়ারিশ হওয়ার পর ফিরোজা বেগমের নামে নাল জমি বিএস রেকর্ডভূক্ত হয়। আব্দুর রহিম নাল জমি ক্রয় করে আমার স্বামীর ভিটা জোরপূর্বক জবর দখল করেছে। আমি এর প্রতিকার চেয়ে আমার সকল আত্মীয় স্বজনের নিকট ধর্ণা দিয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে আজ আপনাদের স্মরণাপন‍্য হয়েছি। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি, আমার এতিম সন্তানেরা ন্যায় বিচার পায়,সঠিকভাবে তাদের পিতার ওয়ারিশ মতো পৈত্রিক সম্পদ ফিরে পায় তার জন‍্য সহযোগিতা কামনা করছি।

 

RN/BK/RJ-8/7/23

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here