Sunday, May 19, 2024

দৌলতদিয়া এক সাপ্তহ্ ঘরে আটকে রেখে যুবককে নির্যাতন, ফেঁসে যাচ্ছেন ইউপি সদস্য

  • রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে অটোরিকশা চুরির ঘটনায় এক যুবককে ৬ দিন ধরে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী যুবকের নাম রাসেল শেখ (২০)। সে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সৈদাল পাড়ার নজরুল শেখের ছেলে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম ওসমান কাজী।তিনি দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সদস্য।

এ ঘটনায় শনিবার রাসেলের নানী জহুরা খাতুন (৭০) ও খালা শুকুর জান (৫০) বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ইউপি সদস্য ওসমান কাজী সহ ৫ জন ও অজ্ঞাত নামা আরো ৬/৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ মকবুল কাজী (২৮) নামের একজন এজাহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে।সে ইউপি সদস্য ওসমান কাজীর ছোট ভাই। এ ঘটনার পর ওসমান কাজীও গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন।

জানা গেছে, দৌলতদিয়ার সৈদাল পাড়া এলাকায় প্রায় ৩ মাস আগে সোনামুদ্দিন নামে একজনের একটি অটোরিকশা চুরি হয়। ভুক্তভোগী যুবক রাসেল ঢাকায় অটোরিকশা চালায়। তার মায়ের বিদেশে যাওয়া উপলক্ষে সে কিছুদিন আগে বাড়ি আসে।মাকে বিদায় দেয়ার পর গত ১৯ নভেম্বর ঢাকার উদ্দেশ্যে সে বাড়ি হতে বের হয়। কিন্তু দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে পৌছালে ইউপি সদস্য ওসমান ৭/৮ জন যুবকসহ গিয়ে তাকে পাকড়াও করে। তারা রাসেলকে সোনামুদ্দিনের অটো চুরির দায় দিয়ে বাস কাউন্টার ও তেলের পাম্পের দোতলায় নিয়ে দুদফা মারপিট করে।রাতে রাসেলকে ওসমান কাজী তার বাড়িতে আটকে রেখে শারিরীকভাবে নির্যাতন করে এবং নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে চুরির কথা স্বীকার করতে বাধ্য করে। পরদিন ২০ নভেম্বর তাকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আয়োজিত শালিসে নিয়ে যাওয়া হয়। চেয়ারম্যান আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে শালিস বৈঠকে সে অটো চুরির কথা স্বীকার করে এবং তার সাথে জড়িত কয়েকজনের নাম জানায়।

এ বিষয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাসেল সাংবাদিকদের জানায়,”মেম্বার ওসমান আমাকে বেদম মারপিট করে ও প্রাননাশের হুমকি দেয়। যে কারনে আমি ভয়ে তার শেখানো মতো শালিসে অটো চুরির কথা স্বীকার করি।আসলে আমি এ বিষয়ে কিছুই জানিনা।আমি ঢাকায় থাকি। এলাকার এ সকল বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।”

রাসেলের নানী জহুরা খাতুন (৭০) জানান,আমরা রাসেলকে ওসমান মেম্বারের বাড়িতে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখার ঘটনা জানার পর শুক্রবার রাতে ৯৯৯ -এ ফোন করি।পরে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ এসে রাসেলকে ওসমানের ভাই মকবুলের ঘর থেকে উদ্ধার করে অসুস্হ্য অবস্থায় গোয়ালন্দ হাসপাতালে নিয়ে যায়।রাত সারে ১১ টার দিকে আমরা বাড়ি ফেরার পথে ওসমানের লোকজন তাদের উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে তিনি নিজে,তার মেয়ে শুকুর জান ও নাতনি হাজেরা আহত হন।

দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল জানান, শালিসের পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত (২৭ নভেম্বর) তিনি রাসেলকে তার স্বজনদের জিম্মায় থাকার আদেশ দেন।ঘরে আটকে রাখার বিষয়টি তার জানা নেই।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ওসমান কাজী মুঠোফোনে জানান,রাসেলের কোন আত্মীয় -স্বজন তাকে জিম্মায় নেয়নি।ফলে উপস্হিত সকলের অনুরোধে তাকে তার হেফাজতে নেন। তাকে কোন ধরনের নির্যাতন করা হয়নি।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, কাউকে ঘরে আটকে রাখা বা কোন অভিযোগে নির্যাতন করা আইনত অপরাধ। এ ঘটনায় ভিকটিম রাসেলের পরিবারের পক্ষ হতে পৃথক দুটি মামলা করা হয়েছে। তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।অটো চুরির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here