মোজাম্মেলহক, গোয়ালন্দ( রাজবাড়ী): গাঙে মাছ ধরিতে যায়, গাঙের উজান বাঁকে ছোট্র ডিঙি নায়। পদ্মা নদীর কাটলি ভরী তাই তো আমরা ঘাউরা মাছ ধরি। ঘাউরা মাছের কথা যতটা প্রবাদে শোনা যায় ততটা বাজারে দেখা যায় না। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে জেলেরা বড়শি দিয়ে ঘাউরা মাছ শিকার করেই চালাচ্ছে সংসার।
জানা গেছে, পদ্মা নদীতে ২০ থেকে ৩০ টি ঘাউরা মাছ ধরার নৌকা রয়েছে। প্রতিদিন ঘাউরা মাছ ধরতে জেলেদের খরচ হয় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাক।এই মাছ ধরতে জেলেদের কিনতে হয় তিমির তেল বা শিশুমাছের তেল, পটিমাছ পচা, ডালডা, মরা মুরগির মাংস, গরুর চর্বি। প্রথমে ভাল করে মুগির মাংসের চামড়া সরিয়ে কিছু মাংস কাঁচা আলাদা করে কেটে রেখে, কিছু মাংস মসলা ছাড়া সিদ্ধ করে মাংস ফাকি করে তিমির তেল ডালডা, পটিমাছ পচা, গরুর চর্বি, ভাল ভাবে মাখিয়ে একটি বালতিতে রাখে।আর কাঁচা মাংসর টুকরা গুলো সুতার দিয়ে বেধে নদীতে ফেলে নৌকার সাথে বেধে রাখে। সে সময় সেি খাবারের ঘ্রাণে ঘাউরা মাছ চলে আসলে তখন বড়শি দিয়ে টেনে টেনে মাছ গুলো নৌকার মধ্যে ফেলে। এভাবে প্রতিদিন এক একটি নৌকায় ১০ থেকে ২৫ কেজি ঘাউরা মাছ ধরা পড়ে।পদ্মা নদীতে এই মাছ গুলো প্রচুর পরিমাণ পাওয়া যায়। জেলেরা মাছ বাজারে বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করে। এই মাছের মাধ্যমে আমরা আমাদের আমিষের চাহিদা মিটাই। মাছের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী মাছের ধরার কৌশল ভিন্ন হয়।তেমনি মাছ ধরার জাদুকারী পদ্ধতিতে মাছ ধরছে জেলেরা।
জেলে শারুখ বেপারী বলেন,আমি ১০ বছর যাবৎ এই ঘাউরা ধরছি। আমরা যে পদ্ধতিতে বড়শি দিয়ে ঘাউরা মাছ ধরছি তাতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়।আর এই টাকা খরচ করে প্রতিদন ১০ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত মাছ ধরে থাকি। সে মাছ বাজারে অথবা নদীতে নৌকার উপর থেকে বিক্রি হয় ৪০০ শত থেকে ৫০০ শত টাকা কেজি দরে। এই করেই সংসার চালাচ্ছি।
আরেক জেলে কালাম বলেন, নদীতে ১০ থেকে ১২ বছর যাবৎ এই ঘাউরা মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছি। কিন্তু আমাদের কোন জেলে কার্ড নেই এবং কোন সাহায্য সহযোগিতা পায়নি কোথাও থেকে। আমরা যারা নদীতে ঘাউরা মাছ ধরি তাদের সকলের একটি করে জেলে কার্ড যদি করে দিতো মৎস্য অফিসার তাহলে আমরা সবাই একটু ভাল থাকতে পারতাম।
গোয়ালন্দ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা টিপু সুলতান বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান এর মাধ্যমে যাচাই বাচাই করে জেলে কার্ড করতে পারবে। নদীতে যে সকল জেলেরা ইলিশ মাছ ধরনে তারাই শূধু জেলে কার্ড পাবে। তাছাড়া অন্য অন্য মাছ যারা নদীতে ধরনে তাদের জেলে কার্ড পাবে না। তারা যে পচা খাবার দিয়ে ঘাউরা মাছ শিকার করছে এটা কে আমারা সমর্থন করি না।