Thursday, November 21, 2024

পুলিশের অভিযানে অবশেষে ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও দুই আসামী গ্রেফতার

রাজবাড়ী পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামানের অক্লান্তপরিশ্রম ও নিরলস চেষ্ঠায় অবশেষে উদঘাটন হলো ক্লুলেস হত্যা কান্ডের রহস্য ও হত্যার সাথে জড়িত দুইজনকে আটক করা হয়েছে।মোবাইল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যাবহারের মাধ্যমে হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার দুইজন হলো- ১। সাভার এলাকার আক্তার শেখ এর ছেলে শাহিন শেখ(২৮) ২। একই এলাকার  মৃত; হাফিজুল মিয়ার ছেলে কাকন মিয়া(২২) ।

গত ৭ই আগস্ট(শনিবার) সকালে এলাকাবাসীর থেকে খবর পেয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাট ইউপি’র সাভার এলাকা থেকে অজ্ঞাত(৪০) ব্যাক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।  ঘটনাস্থলে ফরিদপুরের পিবিআই ,সি আইডি ও সদর থানার পুলিশ লাশ শনাক্তের চেষ্ঠা করে। স্থানীয়রা কেউ লাশের কোন পরিচয় দিতে পারেনি,কেউ কোন দিন এ এলাকায় দেখেছে বলেও কারো মনে পরে নি। নিহতের  মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিলো। কোনভাবে নিহতের লাশ শনাক্ত করতে না পারায় এবং মরদেশের আত্নীয় স্বজনদের সন্ধান না পাওয়ায় পরবর্তীতে আঞ্জুমান-ই-মফিদুল ইসলাম লাশের দাফন করে।

এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার আইও (তদন্ত কারী কর্মকর্তা)এস আই হিরণ কুমার বিশ্বাস জানান, ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটনে মোবাইল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যাবহারের মাধ্যমে আসামীদের কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। আসামীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে পুলিশ সুপার আমাকে সার্বিক সহযোগীতা করে। প্রায়ই তিনি এ মামলার আপডেট নিয়ে আমার সাথে কথা বলেছেন এবং মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে সর্বাতঙ্ক দিক নির্দেশনা ও সহযোগীতা প্রদান করেছেন। মূলত স্যারের সহযোগীতায়ই ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।মৃত (অজ্ঞাতব্যাক্তি)মেহেদি দৌলতদিয়ার অস্থায়ী বাসীন্দা বলে জানা গেছে।

ঘটনার বিবরণে জানাগেছে, নিহত অজ্ঞাতব্যাক্তি দৌলতদিয়ার পতিতাপল্লীতে ও বিভিন্ন সময় পাশেই বোডিং এ থাকতো। বোডিং এ থাকার সময় একেক বোডিং এ সে একেক নাম লিখাতো। যেহেতু বোডিং এ ঠিকানা ছাড়া কেউ থাকতে পারেনা। একটা বোডিং এ সে মেহেদী নামে ছিলো।পতিতা পল্লীতে দীর্ঘদিন থাকার সুবাধে বিভিন্ন লোকের সাথে তার পরিচয় হয়, সে নিজেকে গরু ব্যাবসায়ী সহ বিভিন্ন ব্যাবসায়ী পরিচয় দিতো। সে সুবাধে পতিতা পল্লীতে চায়ের দোকানদার শাহীন শেখ এর সাথে তার পরিচয় হয়। শাহীনের সাথে তার আর্থিক লেন দেন হয়।সে সুবাধে একদিন নিহত অজ্ঞাত ব্যাক্তি (মেহেদি) শাহীনের বাড়ীতে আসার জন্য কাকন মিয়া সহ তিন জন সাভার এলাকায় শাহীনের বাড়ীতে আসার জন্য ভ্যান যোগে রওনা হয়। শাহীনের বাড়ীতে পৌছানোর আগেই শাহীন অজ্ঞাত ব্যাক্তি (মেহেদি)’র মাথায় শক্ত কাঠ দিয়ে মাথার পেছনে বাড়ি দেয়। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। পরে সাভার এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের আবুল হোসেনের পরিত্যাক্ত ভিটার পাশে কৃষি জমিতে শাহীন ও কাকন মেহেদির মরদেহ ফেলে রেখে যায়। ঘটনার পর আসামীরা পলাতক ছিলো।

অজ্ঞাত নিহত ব্যাক্তি

এস আই হিরণ আরো জানান, ৮শত মোবাইল নাম্বার ট্র্যাকিং করে দুইটি নাম্বারকে টার্গেট করে আসামীদের গ্রেফতার করা হয়।

গত ২৪ শে আগস্ট মোবাইলে ডিভাইসের সর্বোত্তম ব্যাবহার করে হতা মামলার সাথে জড়িত কাকন মিয়াকে রাত সারে ৮ টায় ভরাট ইউপি’র অন্তরমোড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। কাকন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে ঘটনার বিবরণ প্রকাশ করে এবং আসামী শাহীনের নাম প্রকাশ করে। পরবর্তীতে গত ২৮ শে আগস্ট (শনিবার) খানখানাপুর বাজারে অভিযান করে শাহীনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় মৃত ব্যাক্তির মোবাইল ফোন শাহীনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়।

নিহত ব্যাক্তি মেহেদীর হত্যাকারীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে এলাকায় যেমন স্বস্থি ফিরেছে ,তেমনি পুলিশে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।অপরাধীরা যেই হোক তাদের আইনের আওতায় আসতেই হবে বলেও জানান এস আই হিরণ কুমার বিশ্বাস।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here