- রাজবাড়ীর বিসিক শিল্পনগরীর পাশে ঘনবসতি এলাকায় হেলিপোর্ট নামক স্থানে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রশিক্ষন কেন্দ্র। রাজবাড়ী জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী কমান্ডেন্ট এর তত্ত্বাবধানে এখানে চলে তাদের প্রশিক্ষন। এমনকি জেলার বাইরের আনসার ও পুলিশেরাও ফায়ারিং প্রশিক্ষন করে এখানে। দীর্ঘদিন চলে আসা এ ফায়ারিং প্রশিক্ষন কেন্দ্রটি এখন এলাকাবাসীর জন্য মারাত্নক হুমকিতে রুপ নিয়েছে। কারন এ ফায়ারিং রেঞ্জ এর আশে পাশে বেড়ে চলেছে জনবসতি।
বিশেষ করে খোলা আকাশের নিচে ও উন্মুক্ত স্থানে ফায়ারিং করায় ফায়ারিং এর গুলি গিয়ে পরছে বসবাসকারী মানুষের বাড়ীতে। আর এতে অনিরাপত্তায় রয়েছে প্রায় ৫০ টি পরিবার।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ফায়ারিং স্পটে বিকট আওয়াজ। আশে পাশের লোকজন যারা ফায়ারিং এর মাঠ ব্যাবহার করে যাতায়াত করে বাড়ীতে যায় তাদের অন্য পাশ দিয়ে ঘুরিয়ে যেতে হচ্ছে বাড়ীতে। এমন অনেক বাড়ীর সদস্য রয়েছেন যাদের বাড়ীতে যাওয়ার একমাত্র পথ এ হেলিপোর্ট ফায়ারিং রেঞ্জ এর মাঠ।
ফায়ারিং স্পটের বা পাশে ডান পাশে রয়েছে জনবসতি। তাদের তেমন কোন সমস্যা না হলেও যে দিকে লক্ষ করে ফায়ারিং করা হয় সেখান থেকে দক্ষিন পশ্চিম দিকের প্রায় ৫০ টি পরিবার আতংকে থাকে যখন ফায়ারিং শুরু হয়। তাদের অনেকের গায়ে বা ঘরের চালে গিয়ে পরে অধিকাংশ গুলি গুলো।
স্থানীয় বাসিন্দা আঃ মালেক মিয়ার বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় তার টিনের ঘরের চাল ছিদ্র হয়ে মেঝের মাটি ভেদ করে রয়েছে একটি গুলি। তিনি জানান, প্রতিবার ফায়ারিং এর সময় আমাদের বাড়ীর চালে,উঠানে এসে পরে পিতলের ভারি গুলি,এতে আমরা আতংকে থাকি। বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে বাড়ীতে তাদের সমস্যা আরো বেশী হয়। তারা অনেক সময় বাড়ীতে আসা গুলিগুলো কুঁড়িয়ে আনতে যায় তখন যই তাদের গায়ে লাগে তখন তাদের জন্য সেটা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়। আমরা এ ধরনের ঝুকি থেকে বাচতে চাই। তাদেরকে অনেক বার বলেছি,তারা কোন পদক্ষেপ ই নেয় নাই।
মোছাঃসাবিনা বেগম জানান, যখন গুলি শুরু হয়, বৃষ্টির মত গুলি গুলো আমাদের উঠানে এসে পরে। আমরা ঘরের বাইরে যেতে পারিনা। যতক্ষন গুলি চলে আমরা ঘরের মধ্যেই থাকি। বাইরে ফিয়ে কোন কাজকাম করতে পারিনা।
অন্য আরেক ভুক্তভোগী হাফিজা বেগম জানান, আমরা গুলির শব্দে ঘরে থাকতে ভয় করে, ১০টা গুলির মধ্যে ৮ টা গুলিই বাইরে চলে আসে।আমাদের মাথার উপর দিয়ে যায়,উঠানে পরে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী বাসিন্দা খাইরুল জানান, আমি ঘরে শুয়ে ছিলাম। আমার বাড়ীর চালে এসে গুলি গুলো পরেছে। এ দেখেন আমার হাতে ৬টা গুলি। এগুলোর একটা যদি আমার বা আমার মেয়ের গায়ে পরতো তাহলে যদি কিছু হতো এর দায় কে নিত। আমরা এ ধরনের ঝুকি থেকে মুক্তি চাই। আমরা তাদের কে অনেকবার বলেছি। কিন্তু আমাদের কথা কেউ কানেই নেয় নি।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী কমান্ডার মোঃ রাশেদুজ্জামান জানান, আজকে মাদারীপুরের-২০ ব্যাটেলিয়ন এর ২৬৯ জন ফায়ারিং এর প্রশিক্ষন নিয়েছে। আমরা ফায়ারিং এর সকল নিয়ম কানুন মেনেই মাইকিং করে সবাইকে সচেতন করে আজকে প্রশিক্ষন চালু করেছি। মাঠের চারপাশে আমার লোক রেখেছি যেন কেউ ফায়ারিং রেঞ্জ এর কাছে না আসতে পারেন। স্থানীয় বাসীন্দারের বলেছি যে কিছু সময় তারা ঘরে থাকেন। তবে কারো গায়ে এস এম জি গুলি লাগলে কোন ক্ষতি হবেনা। কারন গুলি গুলো উপর থেকে গতি কমে নামে। হয়তো ভয়ে তারা এ অভিযোগ করছে। তিনি আরো জানান, অতি দ্রুত আমাদের এ ফায়ারিং মাঠ আরো অত্যাধুনিক করা হবে। উপরে ছাঁদ দিয়ে ঘেরাও করা হবে যেন কারো বাড়ীতে গুলি না যায় । আমরাও চাইনা কারো ক্ষতি হোক। তবে তিনি ভিডিওতে কোন কথা বলতে রাজী হন নি।