ঢাকাঃ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধুয়েমুছে প্রস্তুত করা হচ্ছে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধ। চলছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। রঙ-তুলির আঁচড়ে ও বাহারি রঙের ফুল দিয়ে সাজানো হচ্ছে পুরো সৌধ এলাকা। এজন্য ৪ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় স্মৃতিসৌধে সব ধরনের দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, লাল ইটে সাদা রঙের ছোঁয়া শুভ্রতা ছড়াচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে লাল টবে শোভা পাচ্ছে বাহারি ফুল গাছ। লেকের পানিতে নতুন করে রোপণ করা হচ্ছে লাল শাপলা। লাল-সবুজ ফুলের সমারোহে ছোট ছোট বাগানকে সাজানো হয়েছে অপরূপ সাজে। চত্বরের সিঁড়ি ও নানা স্থাপনায় লেগেছে রঙ-তুলির আঁচড়। এ ছাড়া স্মৃতিসৌধ এলাকার সড়কগুলো বাহারি রঙের বাতি দিয়ে সাজানো হচ্ছে। গাছে গাছে ও স্থাপনাগুলোতে আলোকসজ্জা লাগানো হয়েছে। একই সঙ্গে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে চারদিক সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। তিন বাহিনীর সদস্যদের মোটরসাইকেলযোগে রাষ্ট্রীয় মহড়া দিতেও দেখা গেছে।
১৬ ডিসেম্বর ভোরের সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে নাম না জানা লাখো শহীদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. শাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, কূটনৈতিক কোরের ডিন ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা। এ সময় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া হবে তিন বাহিনীর গার্ড অব অনার। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সর্বসাধারণের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটক উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। পরে সেখানে শ্রদ্ধা জানাবেন বিএনপি-আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় স্মৃতিসৌধ ও আশপাশের এলাকায় চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান। ইতোমধ্যেই সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে ১৬ ডিসেম্বর ভোর ৪টা থেকে উত্তরবঙ্গ থেকে আসা বিভিন্ন ধরনের পরিবহনকে চন্দ্রা থেকে গাজীপুর হয়ে চলাচলের অনুরোধ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ’এলাকায় যেসব জনবসতি আছে, তাদের নাগরিকত্ব ফরম দিয়েছি। নতুন কোনো ব্যক্তির এলাকায় প্রবেশাধিকারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এ এলাকার অধিবাসীসহ সকলের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের অনুরোধ রেখেছি, বহিরাগত কেউ যদি তাদের এলাকায় অবস্থান করে আমাদের অবহিত করার জন্য।’
জাতীয় স্মৃতিসৌধের ইনচার্জ হচ্ছেন গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ’এবার বিজয় দিবস উদযাপনে স্মৃতিসৌধকে দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে। নতুন নতুন ফুলের চারা রোপণ করা হয়েছে। এখন অল্প কিছু কাজ বাকি রয়েছে। এ ছাড়া পুরোপুরি প্রস্তুত শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।’