উজ্জল হোসেন, পাংশা : রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার সড়ক গুলো যেন এখন মাটি ব্যবসায়ী ও ইটভাটার মালিকদের দখলে।
ইটভাটা ও মাটি ব্যবসায়ীদের মাটিবাহী গাড়ির চলাচল করার কারণে পাকা সড়কগুলো যেনো কাঁচা মাটির রাস্তায় পরিণত হয়েছে। সড়কের উপরে চলন্ত গাড়ি হতে পড়ে থাকা মাটি শুষ্ক মৌসুমে ধুলা আর একটু বৃষ্টিতে পিছলা হয়ে বিভিন্ন যানবাহন চলাচলের সময় লোকগুলো মৃত্যুর ফাঁদে পরিণত হয়। এছাড়াও এসব সড়ক দিয়ে পায়ে হেটেও চলাচল করাও একটা বিপদ বলে মনে করেন স্থানীয় জনগণ। সড়কগুলো দিয়ে গাড়ি চলাচলের সময় দুর্ঘটনার স্বীকার হচ্ছে দুই চাকার যানবাহন চালকেরা।
পাংশা উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে বাটাহাম্বার ও ট্রাম ট্রাকের গাড়ির সাহায্যে চলছে দিন রাত মাটি টানার কাজ।মাসের পর মাস ধরে কতিপয় মাটি ব্যবসায়ীরা সড়কে মাটি ফেলে পাকা রাস্তাগুলো কাঁচায় পরিণত করে সাধারণ মানুষের চলাচলের ভোগান্তি সৃষ্টি করলেও তাদের প্রতি আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় না।
জানা যায়,পাংশা উপজেলায় প্রায় ১৭ টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটা ও বাণিজ্যিক প্রয়োজনের জন্য বিভিন্ন ফসলি জমি ও ডোবাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বিনা অনুমতিতে মাটি কেটে সেগুলো ঐ সকল যানবাহনে করে ভাটায় নেয়া হচ্ছে মাট। আর এসব গাড়ি থেকে মাটি পড়ে পড়ে জমে থাকছে সড়কের উপরে। এই ভাবেই পাকা রাস্তায় মাটি পড়ে পিচঢালা সড়ক যেনো কাঁচামাটির সড়কে পরিণত হয়েছে।
৩১ মার্চ(রবিবার)যশাই,মাছপাড়া, হাবাসপুর,বাহাদুরপুর ইউনিয়নে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ইটভাটা ভরাট করার জন্য প্রতিদিন শতাধিক মাটি বহনকারী মাহিন্দ্রা, বাটাহাম্বার ও ড্রামট্রাক চলছে এ সব সড়ক দিয়ে। ট্রাকের বড় বড় চাকা প্রতিনিয়ত পাকা রাস্তায় চলাচল করায় পিচ ও পাথর গুঁড়ো হয়ে ধুলোবালিতে পরিণত হচ্ছে। পরে সেগুলোই উড়ে পথচারীদের চোখেমুখে পড়ছে। যার কারণে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। এ ছাড়া মাটি বহনকারী গাড়ি থেকে কাঁদামাটি পাকা রাস্তায় পড়ে হরহামেশাই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। এর ফলে সরকারের কাছে মাটিবাহী গাড়ি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। নাম না প্রকাশের শর্তে এক জন বলেন,ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জেল জরিমানা করার বিধান থাকলেও অভিযোগ দিলেও পাংশা উপজেলা প্রশাসন রয়েছিল নিরব। আব্দুর রাজ্জাক নামের একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ধুলাবালীর জন্য আমাদের থাকা খুবই কষ্ট হয়। ধুলাবালির কারণে ঘরের টিন একবার নষ্ট হয়ে গিয়েছে আবারো মরিচা ধরতে শুরু করেছে। আম-কাঁঠাল ধুলাবালির কারণে ঝরে পড়ে যায়। অভিযোগ দিয়েছি কোন কাজ হয়নি।
মোঃ হাসান আলী খাঁ বলেন, বৃষ্টি হলেই রাস্তায় সেই কাঁদা হয় চলাফেরা যায় না আর বৃষ্টি না হলে ধুলাবালির জন্য কাপড় চোপড় থেকে শুরু করে তোসক- কাঁথার মধ্যেও ধুলাবালি ভরে যায়! এতে আমরা খুবই ভোগান্তের মধ্যে রয়েছি। আমরা এর আগে অভিযোগ দিয়েছিলাম কোন কাজ হয়নি।
এবিষয়ে পাংশা উপজেলা প্রকৌশলী মো. জাকির হাসান বলেন, যে রাস্তা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার জন্য আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করতে পারি এর বেশি আমাদের কিছু করার নেই।’