রাজবাড়ী প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ীতে পারিবারিক কলহের জেরে গলা টিপে ও পানিতে চুবিয়ে হাসি বেগম (৪০) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামী মনিরুল কাজীকে (৪৮) আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বানিয়ারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
হাসির মা জাহেদা বেগম জানান, ২০ বছর আগে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের ছাবনিপারা গ্রামের মনিরুল কাজীর সঙ্গে সদর উপজেলার সুলতানপুর বানিয়ারী গ্রামের হাসি বেগমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে হাসির বাবার বাড়িতে ঘরজামাই থাকতেন মনিরুল।
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে হাসির বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে হাসির বাবার বাড়ির জমি বিক্রি করে টাকা দেয়ার জন্য তাকে চাপ দিত মনিরুল। হাসি জমি বিক্রি করতে চাইতো না। ফলে হাসিকে প্রায়ই মারধর করতো তার স্বামী। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) রাতে এ বিষয় নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। রাতে গোয়াল ঘরে মশার কয়েল দিতে যায় হাসি। এ সুযোগে গোয়াল ঘরে গিয়ে হাসিকে গলা টিপে ও গরুর পানি খাওয়ার হাউসে চুবিয়ে হত্যা করে মনিরুল।
হাসি ও মনিরুল দম্পতির ১২ বছর বয়সী এক ছেলে এবং ১৭ ও ৯ বছর বয়সী দুটি মেয়ে রয়েছে। এ ঘটনায় হাসির ভাই ইয়াকুব মোল্লা বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
হাসির বড় মেয়ে রিতু খাতুন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে রাতের খাবার খেয়ে আমি ও আমার ছোটবোন মুনিয়া ঘরের এক রুমে ঘুমাই। আর মা ও ছোটভাই সাইম অন্য রুমে ঘুমায়। বাবা ঘুমায় ঘরের বারান্দার এক রুমে। রাত ১ টার দিকে আমার ঘুম ভাঙলে পাশের রুমে গিয়ে দেখি ছোটভাই একা বিছানায় শুয়ে আছে, কিন্তু মা নেই। তখন আমি বাবাকে ডাক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলে বাবা বলে মা তার রুমে আছে। এ কথা শুনে আমি আমার রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ি। ভোর ৫টায় ফজরের নামাজ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে আমি আবারও মায়ের কথা জিজ্ঞাসা করি। তখন বাবা বলে যে সে আমার মাকে গোয়ালঘরের মধ্যে হত্যা করে ফেলে রেখেছে। আমি দৌড়ে ঘোয়াল ঘরে গিয়ে মায়ের মরদেহ দেখতে পাই।’
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘হাসির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত মনিরুলকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’