দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথের রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্তে দীর্ঘ হয়েছে যানবাহনের সারি। ফেরি স্বল্পতা, রো রো ফেরির জন্য ঘাটসংকট ও বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটের গাড়ির চাপ থাকায় দৌলতদিয়া প্রান্তে বেড়েছে গাড়ির চাপ। ফলে সব থেকে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ট্রাকচালক ও হেল্পারদের নিয়ে।
সোমবার (০১ নভেম্বর) সকালে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় ও গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় ফেরি পারের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ৯শতাধিক যানবাহন। এসব যানবাহনের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখ্যায় বেশি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ডাইবেশন পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার মহাসড়কের দুই লাইনজুড়ে পাঁচ শতাধিক যানবাহনের দীর্ঘ সারি। অপেক্ষায় এসব যানবাহনের মধ্যে রাতের নৈশকোচ ও ট্রাকের সংখ্যায় বেশি।
অন্যদিকে ফেরিঘাটে যানজট কমাতে ঘাট থেকে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পিছনে গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ীর দিকে আরও ৪ কিলোমিটার ৪ শতাধিক অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি রয়েছে।
দৌলতদিয়া ঘাটে যানজটের কারণে যাত্রীবাহী বাসগুলোকে চার-পাঁচ ঘণ্টা এবং পণ্যবাহী যানবাহনকে তিন দিন পর্যন্ত ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে যাত্রী ও যানবাহনের চালকদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। অনেক ট্রাকচালকরা ঝুঁকি নিয়েই ট্রাকের মধ্যে রান্না করছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
রাজবাড়ী ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক তারক চন্দ্র পাল বলেন, ঘাটের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। যানবাহনের এতোটাই চাপ যে ঘাটের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না। এই রুট পরিহার করার জন্য আমরা মাইকিং শুরু করেছি। ট্রাকচালকদের আমরা অন্যরুট ব্যবহার করার জন্য বলছি।
গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে থাকা ট্রাকের চালক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ২ দিন হয়ে গেল গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে আছি। এখানে আশেপাশে কোনো শৌচাগার নেই, নেই খাবার হোটেলও। আমাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
আরেক ট্রাকচালক কামরুল ইসলাম বলেন, আশেপাশে খাবার হোটেল না থাকায় ট্রাকের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে খাবার রান্না করছি। খাওয়াতো লাগবে আমাদের। দুই তিন দিন হয়ে গেলো ফেরির অপেক্ষায় মহাসড়কে খোলা আকাশের নিচে আটকে আছি। আজকে আবার পুলিশ মাইকিং করছে এই রুট পরিহার করতে। আমরা যাব কোথায় তাহলে?
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, “আমরা এখন নিরুপায় হয়ে গেছি। যানজট পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এখন চালকদের এই রুট পরিহার করার জন্য বলছি। তাছাড়া এখন আমাদের কিছু করার নেই। এই রুটে বর্তমানে ১৫ ফেরি চলাচল করছে।”