Sunday, November 24, 2024

পদ্মা সেতু উদ্বোধনে পাল্টে যাবে দৌলতদিয়া ঘাটের চিত্র 

মোজাম্মেলহক,গোয়ালন্দ: দেশের টাকায় তৈরী করা স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়া এখন শুধুমাত্র সময়ের ব্যাপার। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বদলে যাবে দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশদ্বার খ্যাত দৌলতদিয়া ঘাটের চিত্র।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অর্থনৈতিক-সামাজিক মুক্তির দ্বারও দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। ভোগান্তির অপর নাম ছিল দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট।এখন সেই নৌরুট হবে স্বস্তির আবাসন।

সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, পদ্মা সেতু চালু হলে দৌলতদিয়া ঘাটের চিরো চেনা রূপ পাল্টে যাবে। এছাড়াও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ কমাসহ ব্যবসায়ীদের ব্যবসার ক্ষতি হবে। দৌলতদিয়ায় যেখানে দিনের পর দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা নদী পারের জন্য যানবাহন অপেক্ষা করতে হতো সে অপেক্ষা আর করতে হবে না। পদ্মা নদী পাড়ি দেওয়ার জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহন নদী পারাপার হতো। সেতু চালু হলে সে ভোগান্তি আর থাকবে না।

বিশেষ করে ঈদের সময়গুলোতে যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। যার কারণে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা। দিনের পর দিন নদী পারের অপেক্ষায় পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অপেক্ষা করতে হয় খোলা আকাশের নিচে। মানবেতার জীবনযাপন করেন চালক ও চালকের সহকারীরা।
এছাড়া নদী পাড়ি দেওয়ার জন্য দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহণ ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে অপেক্ষায় থাকতে হয় ফেরির। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরিবহনের মধ্যে থেকে প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়েন নারী, শিশু ও বয়স্কদের পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে।
কিন্তু আশার কথা হলো- পদ্মা সেতু চালু হয়ে গেলে এ নৌরুটে চাপ কমবে যানবাহনের এমনটাই প্রত্যাশা করছেন যাত্রী ও চালকরা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যে ভোগান্তি পোহাতে হতো সেটার অবসান ঘটতে যাচ্ছে। তখন আর ফেরির জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হবে না কোনো যানবাহনেরই।
তবে পদ্মা সেতু চালু হলে ঘাটে কোন জ্যামজট থাকবে না। সেই সাথে ঘাটে খেটে খাওয়া কয়েক হাজার হকার ও হোটেল ব্যাবসায়ী, টং দোকানদার, ঘাটে পন্যবাহি ট্রাক পারা পার করা সুপার ভাইজাররা বেকার হয়ে পড়বে। এতে করে ঘাট এলাকায় চুরি ও ছিনতাই বেড়ে যাবে।

এ বিষয়ে কিং ফিস পরিবহনের দৌলতদিয়ার ঘাট সুপারভাইজার জামাল বলেন, এখন থেকেই দৌলতদিয়া ঘাট যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে এবং ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ অনেক কমে যাওয়ায় মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধ হয়ে যাবার পথে। এ নৌরুটে দূরপাল্লার পরিবহণগুলো অনেকটা কমে গেছে বলে জানান তিনি।
দৌলতদিয়া ঘাটের হোটেল মালিক আবজাল হোসেন জানান, আমার হোটেলে বন্ধ করে দিয়েছি। কারন হোটেলে খাবার খাওয়ার লোকজন কমে গেছে। প্রতিদিন ক্যাশ ঘাটতি হয়ে যাওয়ায় আর হোটেল চালু রাখতে পারলাম না তাই বন্ধ করে দিলাম।পদ্মা সেতু চালু হলে আমাদের ঘাটে আরো অনেক হোটেলও বন্ধ হয়ে যাবে। ইতোমধ্যে ঘাটের অনেক হোটেল বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
একাধিক পণ্যবাহী ট্রাক চালকেরা বলেন, এ নৌরুটে সব সময় যানজট ও দীর্ঘ গাড়ির সারি সব সময় লেগেই থাকতে। এখন আশা করছি সেই ভোগান্তি আর থাকবে না আমরা দ্রুত নদী পার হতে পারবো। পদ্মা সেতু উউদ্বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের এ ভোগান্তি লাঘব হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনের(বিআইডব্লিউটিসি) কর্মকর্তারা বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই এই নৌরুটে যানবাহনের চাপ কিছুটা কমে যাবে। কিছু কিছু জেলার যানবাহন তখন সরাসরি পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে ঢাকাতে প্রবেশ করবে। আবার ঢাকা থেকে তারা পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রবেশ করবে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here