Monday, December 23, 2024

তুচ্ছ ঘটনায় চাচা শ্বশুর কর্তৃক ভাতিজা বউকে মারপিটের অভিযোগ

অতি তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলার বালিয়াকান্দী উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাড়াদী গ্রামে ভাতিজা বউকে বেধরক মারপিট করে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী মহিলা।

জানা যায়, গত ২৫ ও ২৬ জানুয়ারী রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের বাড়াদী গ্রামের মৃত আব্দুল ওয়াহেদ মল্লিকের ছেলে আব্দুস সোবহান মল্লিক ও তার স্ত্রী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাহিমা বেগম ভাতিজা লিটন মল্লিকের স্ত্রী মোছাঃ নার্গিস বেগম (৩৫)কে তুচ্ছ ঘটনায় বেধরক মারপিট করে আহত করে। এতে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তাদেরকেও অকথ্যভাষায় গালিগালাজসহ লাঞ্ছিত করে। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে নার্গিস বেগম বলেন, আমি আমার স্বামী সন্তানদের সাথে নিয়ে সুন্দরভাবে সংসার করে আসছি। আমাকে এই বাড়ী থেকে বিতারিত করতে আমার চাচা শ্বশুর আব্দুস সোবহান মল্লিক উঠে পড়ে লেগেছেন। গত ২৫ জানুয়ারী দুপুরে আমার সন্তান খেলাধুলা করার সময় তাকে কোনো কারন ছাড়াই মারপিট করে। তার চিৎকারে আমি এগিয়ে গেলে আমাকেও মারধর করে। আমার আত্মচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এলে সোবহান চলে যায়। এবিষয়ে আমি বালিয়াকান্দি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন ২৬ জানুয়ারী ভোর আনুমানিক ৬টার দিকে আব্দুস সোবহান ও তার স্ত্রী ফাহিমা বেগম ভোর আনুমানিক ৬টার দিকে কাঠের বাটাম নিয়ে আমার উঠানে এসে অকথ্য ভাষা প্রয়োগ করতে থাকে। আমি ভালোভাবে কথা বলতে বললে বাটাম দিয়ে আমাকে এলোপাথাড়ী মারতে থাকে। চিৎকার দিলে আমার স্বামী এগিয়ে এলে তাকে ও আমার বাচ্চাদেরকেও বেধরক মারধর করে রক্তাক্ত করে। ঝামেলা ঠেকাতে প্রতিবেশীরা এলে তাদেরকেও লিঞ্ছিত করে। এসময় আমার ঘরে থাকা নগদ ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা ও দেড় ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। আমাকে তাড়তে এই সোবহান উঠেপড়ে লেগেছে। আমি যাচ্ছিনা বিধায় আমারসহ আমার সন্তানদের উপর তার স্ট্রিম রোলার চালাচ্ছেন। মার খেয়ে বালিয়াকানদি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে এবং থানায় পূনরায় আরেকটি লিখিত অভিযোগ করেছি। ভিকটিমের স্বামী লিটন মল্লিক বলেন, আমি একজন শান্তিপ্রীয় মানুষ। বহরপুর বাজারে ব্রয়লার মুরগীর ব্যবসা করে জীবীকা নির্বাহ করে আসছি। স্ত্রী, সন্তনদের নিয়ে আল্লাহ্ আমাকে ভালোই চালিয়ে নিচ্ছেন। আমাকে বাড়ী থেকে বিতারিত করতে আমার চাচা আব্দুস সোবহান ও চাচি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাহিমা বেগম অনেকদিন ধরেই পাঁয়তারা করে আসছে। সময়ে অসময়ে আমি বাড়ী না থাকাবস্থায় আমার স্ত্রী, সন্তানদেরকে অকথ্যভাষাসহ মারধর করে। আমি শুনে কয়েকদিন জিঞ্জাসা করেছি। কোনো জবাব পাইনি। আমি আমার স্ত্রীকে শান্ত থাকতে বলি। মঙ্গলবার দুপুরে আমার স্ত্রীকে মারপিট করলে সে থানায় একটি অভিযোগ করেছে। এর জেরধরে বুধবার ভোরে আমাদের সকলকে মারপিট করে। এসময় ব্যবসার নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। মূলত আমাকে বাড়ী থেকে বিতারিত করাই এদের উদ্দেশ্য। আমি গ্রামের গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিদের কাছে বিচার চেয়েছি কিন্তু কোনো ফল পাইনি। বিধায় থানায় অভিযোগ দিয়েছি। প্রতিবেশী কয়েকজনের নিকট জানতে চাইলে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এদের বাড়ীতে প্রায়ই এধরনের ঘটনা ঘটে। গ্রামের মাতব্বরদের অমান্য করায় গণ্যমান্যরা এই বাড়ীর কোনো বিষয়ে মাথা ঘামায় না। তবে বড় মানুষ হয়ে বাচ্চাদের গায়ে হাত দেওয়া ঠিক হয়নি। ২৫ জানুয়ারী দুপুরে বাইরে লিটন মল্লিক এর ছেলে ও সোবহানের ছেলে খেলা করতে করতে হাতাহাতি করে। এরজেরে বাড়ীতে থাকা আব্দুস সোবহান বাচ্চাটিকে মারধর করে। বলতে গেলে লিটনের স্ত্রী নার্গিস বেগমকে মারধর করে। ভুক্তভোগী নার্গিস বেগম ও তার স্বামী লিটন আর্তনাদ করে বলেন, আমি অসহ্য হয়ে গেছি। গ্রামের মাতব্বরদের নিকট বিচার প্রত্যাশা করে কোনো ফল না পেয়ে প্রশাসনের স্মরনাপণ্য হয়েছি। আমি অসহায়, সুষ্ঠ বিচার আশা করছি।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here