Thursday, May 9, 2024

মাদক ব্যাবসায়ীদের পুলিশে দিচ্ছে গ্রামবাসী

এস এম রাহাত হোসেন ফারুক: রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের চরবহরপুরের প্রত্যন্ত শান্তি “মিশন এলাকা”। ওই এলাকায় প্রবেশ করলেই একটি ব্যতিক্রমী সাইনবোর্ড সকলের দৃষ্টিকাড়ে। ওই সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে “মাদক আছে যেখানে, প্রতিরোধ সেখানে” মাদকমুক্ত গ্রাম, সৌজন্যে মহল্লাবাসী ও যুবসংঘ। প্রায় সাড়ে ৩ মাস পূর্বে এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওই গ্রামটিকে “মাদকমুক্ত” গ্রাম হিসেবে ঘোষনা করা হয়। সেই থেকে ওই গ্রামে বইছে শান্তির বাতাস, সুখে রয়েছেন এলাকাবাসী।

তবে আতঙ্কে রয়েছেন, মাদক সেবা ও ক্রয়-বিক্রয়কারীরা। তারা মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয় করলেই হচ্ছেন গ্রামবাসীর হাতে আটক এবং তুলে দেয়া হচ্ছে তাদের থানা পুলিশের কাছে। যার অংশ হিসেবে গত মঙ্গলবার রাতে চার পুড়িয়া হেরোইনসহ আটক করা হয় তিন জন মাদক সেবীকে। যাদেরকে রাতেই তুলে দেয়া হয় বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের হাতে।

আটককৃতরা হলো, চর বহরপুর গ্রামের মৃত ছামাদ শেখের ছেলে হিবাদত শেখ, কালাম মন্ডলের ছেলে মফিজ মন্ডল এবং মৃত ফটিক শেখের ছেলে ফরিদ শেখ।
বুধবার বিকালে বালিয়াকান্দি থানার ওসি আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, মাদকসেবীদের কোন ছাড় নেই। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

এদিকে (৬ মার্চ) বুধবার দুপুরে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জি.এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, সামাজিক প্রতিরোধের মাধ্যমেই মাদকসেবী ও ক্রয়-বিক্রয়কারীদের নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। বহরপুর ইউনিয়নের চরবহরপুরের প্রত্যন্ত “শান্তি মিশন” এলাকাবাসী মাদকমুক্ত গ্রাম হিসেবে ঘোষনা দিয়ে তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে এটা আশাব্যঞ্জক। গত মঙ্গলবার রাতেও তারা হেরোইনসহ ৩জন মাদকসেবীকে আটককরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। যার প্রভাব আশপাশের এলাকা গুলোতে লেগেছে। এমন সামাজিক কর্মকান্ডে জেলা পুলিশ সব সময় পাশে রয়েছে।

ওই গ্রামের খাজা মাঈনুদ্দীন চিশতী (রহঃ) জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও অবসরপ্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার মোঃ আবু তাহের মোল্লা জানিয়েছেন, তারা বিগত বছরের ২২ নভেম্বর এলাকার আড়াই শতাধিক মুরুব্বী ও বাসিন্দাদের নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনায় উঠে আসে অতিপরিমানে এলাকায় মাদকসেবী ও ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়। যার প্রেক্ষিতে সে সময় ৪১ জন মাদক সেবী ও ক্রয়-বিক্রয়কারীদের তারা হাজির করেন এবং সকলের সামনে তাদের কাছ থেকে লিখিত অঙ্গিকারনামা গ্রহণ করেন। ওই অঙ্গিকারনামায় বল হয়, তারা এখন থেকে আর মাদকসেবন ও ক্রয়-বিক্রয় করবেন না, যদি করেন তবে তাদের অভিভাবকদের সহযোগিতা নিয়েই থানা পুলিশের সোপর্দ করা হবে।

এলাকার বাসিন্দা ড. নিম হাকিম বলেন, ওই আলোচনা সভার পর থেকে এলাকায় সুখের বাতাস বইছে। সাধারণ মানুষগুলো ইতোমধ্যেই সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। তারা নিয়মিত ভাবে কঠোর নজরদারী করছেন। ফলে এলাকায় নেই কোন মাদকসেবী ও ক্রয়-বিক্রয়কারী এবং বহিরাগতরাও এই এলাকায় এসে মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয় করতে সাহস পাচ্ছেন না। আর যারা সহস করছে তাদেরকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ পোষ্ট

এই ধরনের আরো সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here